Advertisement
E-Paper

নদী ফুঁসছে, জলের তলায় রাস্তা ও ঘরবাড়ি, মৃত্যু বিদ্যুতের তার ছিঁড়েও! বন্যা পরিস্থিতি তিন জেলায়, জল ছাড়ছে ডিভিসি

টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যের তিন জেলায়— বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে। যার জেরে ভাঙল সেতু। রাস্তা-ঘরদোরও জলের তলায়। বিদ্যুতের তার ছিঁড়েও প্রাণ গেল এক প্রৌঢ়ার। অন্য দিকে, জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি-ও।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২৫ ১৬:১৫
Flood situation in several districts of the state due to continuous rain, DVC is releasing water

লাগাতার বৃষ্টিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, কংসাবতী— সব নদীই ফুঁসছে টানা বৃষ্টিতে। যার জেরে বন্যা পরিস্থিতি রাজ্যের তিন জেলা— বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে। ভাঙল সেতু। রাস্তা-ঘরদোরও জলের তলায়। বিদ্যুতের তার ছিঁড়েও প্রাণ গেল এক প্রৌঢ়ার। অন্য দিকে, জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি-ও। মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। মাইথন থেকে ২০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ১৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হবে।

মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাঁকুড়ায়। নদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই বহু সেতু জলের তলায় চলে গিয়েছে। জলে ডুবেছে একাধিক রাজ্য সড়কও। নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে বাঁকুড়ার তালড্যাংরা ব্লকের একাধিক গ্রাম। বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার মোট পাঁচটি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দুর্গতদের। বিদ্যুতের হাইটেনশন তার ছিঁড়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার সাহাপুর মাজিপাড়ায় মৃত্যু হয়েছে রেবা মাজির (৫৪)।

দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকতেই নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয় বাঁকুড়ায় । আবহাওয়া দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২১০ মিলিমিটার। এর মধ্যে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বাঁকুড়ায় বৃষ্টির পরিমাণ ১৪২.৬ মিলিমিটার। যার জেরে বুধবার থেকেই ফুঁসতে শুরু করে বাঁকুড়ার উপর দিয়ে যাওয়া থাকা দ্বারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী, কংসাবতী, ভৈরোবাঁকি-সহ বিভিন্ন নদী। গন্ধেশ্বরীর জলস্তর বেড়ে জলের তলায় চলে গিয়েছে মানকানালি সেতু। একই ভাবে শিলাবতীতে জলস্তর বেড়ে গিয়ে সিমলাপালের সেতুও জলের তলায়। এর ফলে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ।

বৃহস্পতিবার সকালে সিমলাপাল সেতুতে আটকে পড়ে তিনটি ট্রাক। ট্রাকে যাঁরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের স্থানীয়েরা উদ্ধার করেন। শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে ভেলাইডিহা সেতুও। আমোদর নদের জলে প্লাবিত হয়েছে কোতুলপুর থেকে জয়রামবাটি যাওয়ার রাস্তা।

ভোর থেকে জয়পন্ডা নদীর জল ঢুকতে শুরু করে তালড্যাংরা ব্লকের পাটতেঁতুল ও বাঁশগড় গ্রামে। বিপদ বুঝে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে স্থানীয় পাঁচমুড়া হাই স্কুলের অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের। জমা জলে তালড্যাংরা ব্লকের আধকড়া গ্রামের একাংশ ডুবে যাওয়ায় সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আধকড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণশিবিরে। স্থানীয় রাধানগর, কুণ্ডুলিয়া ও দেউলভিড়া গ্রামেও খোলা হয় ত্রাণশিবির। তালড্যাংরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গণেশচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘বন্যা পরিস্থিতিতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তালড্যাংরা ব্লকের পাঁচমুড়া এলাকা। বেশ কিছু গ্রামে তিন-চার ফুট উচ্চতায় জল জমে যাওয়ায় কাঁচাবাড়িগুলি ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। জলের উচ্চতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় গ্রামগুলির মানুষকে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাঁচমুড়া এলাকাতেই মোট পাঁচটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য পাঠানো হয়েছে ত্রাণ।’’

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা-২ ব্লকেও কাঠ-বাঁশের একাধিক সাঁকো জলের তলায় চলে গিয়েছে। সেতু ভেঙে পড়েছে গড়বেতা, গোয়ালতোড়েও। গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ হাজরা গিয়েছেন ঘটনাস্থলে। ঘাটাল মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে জলস্তর বেশ কিছু জায়গায় বাড়ছে। নজরদারি চলছে, তবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।’’

Flood Situation In Bengal west bengal flood Rain in West Bengal DVC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy