দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনায় রেল দিশাহারা। তার মধ্যেই সোমবার রাতে একটি এক্সপ্রেস ট্রেনে লুঠপাটের ঘটনা রেল-নিরাপত্তার দুর্দশাকে বেআব্রু করে দিল।
নিয়ম অনুযায়ী রেলের সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব আরপিএফ বা রেলরক্ষী বাহিনীর। আর যাত্রীদের নিরাপত্তার রক্ষার দায়িত্ব রেল পুলিশের। তাই রেল পুলিশের ৫০% বেতন দেয় কেন্দ্র। কিন্তু যাত্রী-নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রেল পুলিশের অবহেলা ঠিক কোথায় পৌঁছেছে, হাওড়ামুখী জোধপুর এক্সপ্রেসে লুঠপাটে ফের তার প্রমাণ মিলল। সোমবার শেষ রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ওই ট্রেনের সাত কামরায় অবাধে লুঠপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। দেখা মেলেনি রেল পুলিশ বা আরপিএফের। এমনকী যাত্রীরা এক দুষ্কৃতীকে ধরে আটকে রাখলেও সকালে হাওড়ায় ট্রেন না-ঢোকা পর্যন্ত এমন কোনও রেল পুলিশকর্মীর দেখা পাননি, যাঁর হাতে ওই দুষ্কৃতীকে তুলে দেওয়া যায়।
ঠিক কী ঘটেছিল ওই ট্রেনে?
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোগলসরাই ছাড়ার কিছু পরেই অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। মাঝরাতে কয়েক জনকে কামরায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেও কারও তেমন সন্দেহ হয়নি। প্রথম সন্দেহ হয় এস-৪ কামরায় মোগলসরাই থেকে ওঠা এক দল বরযাত্রীর। তাঁরা হাওড়া ময়দান এলাকা থেকে গিয়েছিলেন। ওই দলের এক যুবক প্রথমে দেখতে পান, এক দুষ্কৃতী তাঁর স্ত্রীর ব্যাগ টেনে নিয়ে পালাচ্ছে। তিনি চিৎকার করে ওঠায় অন্যদের ঘুম ভেঙে যায়। চোরকে ধরে উত্তমমধ্যম দিতেই সে জানায়, ১২-১৪ জনের একটি দল মোগলসরাই থেকে উঠেছে এবং ৬-৭টি কামরায় লুঠপাট চালিয়েছে।
ট্রেনটি এ দিন হাওড়ায় ঢোকার পরে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গুড়িয়া রাউত নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের দলটি বিনা বাধায় গয়না, টাকা হাতানোর সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত মালপত্র দরজা দিয়ে ফেলতে ফেলতে গিয়েছে। কিন্তু কোনও রক্ষীকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি।’’ মীনা রায় নামে এক যাত্রীর অভিযোগ, ট্রেনযাত্রীরা এক দুষ্কৃতীকে ধরলেও তাকে জিম্মায় দেওয়ার মতো রক্ষী পাওয়া যায়নি।
কী বলছেন রেল পুলিশকর্তারা?
‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, আমাদের এলাকায় চুরি হয়নি। মোগলসরাই জিআরপিকে সব জানিয়েছি। যা বলার, ওরাই বলবে,’’ বলেন হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী। দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার রবি মহাপাত্রও। তিনি বলেন, ‘‘জোধপুর এক্সপ্রেসে লুঠপাটের ঘটনাটি পূর্ব রেলের এলাকায় হয়নি। তবে অমৃতসর-কলকাতা দুর্গিয়ানা এক্সপ্রেসে এ দিনই এক মহিলা যাত্রীর ব্যাগ ছিনতাই হয়েছে। তিনিও আসানসোল স্টেশনে অভিযোগ জানাতে পারেননি। হাওড়ায় পৌঁছে থানায় অভিযোগ জানান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy