Advertisement
E-Paper

দিনহাটার শিবির যেন নেই-রাজ্য

প্রাচীন প্রবাদকে একটু এদিক ওদিক করে বাসিন্দারা বলেন, ‘টিনের ঘরে বাস, ঝক্কি বারো মাস!’ 

সুমন মণ্ডল 

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:১৫
টিনের ঘরেই বাস: দিনহাটায় ছিটমহল সেটেলমেন্ট ক্যাম্প।

টিনের ঘরেই বাস: দিনহাটায় ছিটমহল সেটেলমেন্ট ক্যাম্প।

সাড়ে চার বছর হয়ে গেল। এখনও যদি গিয়ে দিনহাটা সাবেক ছিটমহলের সেটলমেন্টের ক্যাম্পে গিয়ে কেউ ঢোকে, সামনে সেই মাটির রাস্তা। পাশে টিনের ঘর। যেখানে শীতে প্রবল ঠান্ডা, গরমে প্রচণ্ড গরম। প্রাচীন প্রবাদকে একটু এদিক ওদিক করে বাসিন্দারা বলেন, ‘টিনের ঘরে বাস, ঝক্কি বারো মাস!’

স্থানীয়দের অভিযোগ, তাঁরা আদতে নেই-রাজ্যের বাসিন্দা। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন বাইরে কাজের খোঁজে। মৃণাল বর্মণ, কার্তিক বর্মণ, ফুলেশ্বরী বর্মণ, খলিলুর রহমানদের অনেকেই এখন ভারতের অন্য রাজ্যে। নতুন সিএএ হওয়ার পরে বাড়ির লোকেদের এখন নতুন আশঙ্কা, ভিন্ রাজ্যে আবার কোনও বিপদে পড়তে হবে না তো তাঁদের?

আর যাঁরা দিনহাটার এই শিবিরে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের কী অবস্থা?

মৃণাল বর্মণ অভিযোগ করেন, ‘‘ছিটমহল চুক্তির পর তো আশ্বস্ত করা হয়েছিল, ভারতে গেলে ভারত সরকার যা দেবে, তা শেষ করা যাবে না। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্থায়ী আবাসন জোটেনি। সরকারের পক্ষ থেকে জব কার্ড করে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দিকে কয়েক দিন কাজ মিললেও তার পর তিন বছর কেটে গিয়েছে, কোনও কাজ জোটেনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘৫-৬ জনের সংসার। ৩০ কেজি চালে গোটা মাস চালানো অসম্ভব।’’ বিস্তর অভিযোগ আছে রেশন বরাদ্দ নিয়ে। এর মধ্যে আর এক বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, “শীতে শিশির পড়ে। গরমে তো টিনের ঘরে থাকা যায় না। তার মধ্যেই আছি।” ওইটুকু ঘরে ৫-৬ জনের পরিবার নিয়ে স্থান সঙ্কুলান হয় না, এই কথাও জানিয়েছেন অনেকে। কবে নতুন বাড়ি হবে, প্রশ্ন তুলেছেন মৃণাল-খলিলুররা।

এ সবের পাশাপাশি ছিটমহলবাসীদের অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন বরাদ্দ টাকা নয়ছয়ের। যদিও কেউই নাম করে কিছু বলতে চাননি। কিন্তু এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিস্তর।

দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “স্থায়ী আবাসনের জন্য কাজ শেষের পথে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবেক ছিটমলহলের বাসিন্দাদের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁদের যে কোনও অসুবিধায় আমরা পাশে আছি।”

দিনহাটা-১ ব্লকের বিডিও সৌভিক চন্দ জানান, ‘‘দিনহাটার হিমঘর সংলগ্ন এলাকায় সাবেক ছিটবাসীদের জন্য আবাসন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ের দিকে। আশা করা যাচ্ছে আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যে এই ফ্ল্যাটগুলি প্রশাসনের হাতে গেলে কৃষি মেলার সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে থাকা বাসিন্দাদের সেখানে স্থানান্তরিত করা সম্ভব হবে।’’

India–Bangladesh Enclaves Dinhata ছিটমহল Chit Mahal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy