Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জোট থাকলে ভাঙবে ফ্রন্ট, হুমকি ফব-র

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তায় থাকলে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টে ভাঙন ধরবে বলে হুঁশিয়ারি দিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৬ ০৩:৫১
Share: Save:

আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের রাস্তায় থাকলে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টে ভাঙন ধরবে বলে হুঁশিয়ারি দিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করতে ফব-র কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে দলের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসের আশঙ্কা, শুধু বামফ্রন্ট নয়, এর ফলে সিপিএমও ভেঙে যাবে! তাঁর বক্তব্য, সিপিএমের চাপে এই জোট তাঁরা মেনে নিয়েছিলেন বলেই এখনও বামফ্রন্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেননি। কিন্তু বিধানসভা ভোটে সিপিএম যে আসলে কংগ্রেসের সঙ্গে পুরোপুরি জোট করে ফেলবে, তাঁরা আগে বুঝতে পারেননি।

দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, মুখে না বললেও সিপিএমের নেতারা সবটাই আগে থেকে ছকে ফেলেছিলেন। এ ক্ষেত্রে আলিমুদ্দিনের পিছনে এ কে গোপালন ভবনের নেতাদের মদত ছিল। এখন ভোটে ভরাডুবির তাঁদের সতর্ক করতে ও ভবিষ্যৎ পন্থা স্পষ্ট করে জানতে ফব-র নেতারা শীঘ্রই এ কে গোপালন ভবনে গিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তবে দিল্লিতে বসে দেবব্রতবাবু যখন জোটের জন্য সিপিএমের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন, কলকাতায় বিধানসভায় সেই সময়েই বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানের সঙ্গে ফ ব বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর) মিডিয়া সেন্টারের দিকে গিয়েছেন কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটি বয়কটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে!

রাজ্য বামফ্রন্টের মধ্যে শরিকেরা আগেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সিপিএম নেতাদের সাবধান করেছিল। কিন্তু আজ কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে দেবব্রতবাবু যে ভাবে সিপিএমকে আক্রমণ করেছেন, তা নজিরবিহীন। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘এ বার সিপিএমের মেনে নেওয়া উচিত যে, তারা বিশাখাপত্তনমের পার্টি কংগ্রেসের লাইন ভেঙেছে। যেখানে বৃহত্তর বাম ঐক্যের কথা বলা হয়েছিল।
তার বদলে পাঁচ বছরেই ক্ষমতায় ফেরার তাড়নায় সুবিধাবাদী লাইন ধরেন সিপিএম নেতারা!’’ তাঁর অভিযোগ, আসন সমঝোতা হচ্ছে, না কি নির্বাচনী আঁতাঁত, তা নিয়ে সিপিএমে বিভ্রান্তি ছিল। দেবব্রতবাবুর মন্তব্য, ‘‘সেই কারণেই এক নেতা যখন কংগ্রেসের যুবরাজের সঙ্গে এক মালা গলায় পরছেন, আর এক নেতা প্রচারে গিয়েও চায়ের দোকানে বসে রয়েছেন, যাতে কংগ্রেসের সঙ্গে মঞ্চে যেতে না হয়!’’

ফব-র অভিযোগ, কংগ্রেসের জমানায় দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধির জন্যই বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। কংগ্রেস বরাবর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে আপস করে। সেই কংগ্রেসের সঙ্গে, বিশেষ করে অধীর চৌধুরীর মতো নেতাকে যে ভাবে সূর্যকান্ত মিশ্র জড়িয়ে ধরেছেন, কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসের প্রদর্শনী হলে এই সব ছবি নিয়ে একটি আলাদা বিভাগ করতে হবে!

রাজ্য নিয়ে সিপিএমকে তুলোধোনা করলেও কেরল নিয়ে অবশ্য ফব নিজেই অস্বস্তিতে। কারণ সেখানে কংগ্রেসের জোটে যোগ দিয়েছিল ফব।
দেবব্রতবাবুর যুক্তি, কেরলে বাম মোর্চায় ফব-কে নেওয়া হয় না। ইএমএস নাম্বুদ্রিপাদ-চিত্ত বসুর জমানা থেকে এই বিবাদ চলছে। সেই কারণেই রাজ্য নেতারা সাময়িক ভাবে জোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেসের সঙ্গে না যাওয়ার কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত কেরলেও বর্তাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Left Front alliance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE