E-Paper

রাজ্যে ফের সংক্রমণ জিবিএসের, দুই জেলায় দুই আক্রান্তের খোঁজ

চলতি বছরের শুরুতে মহারাষ্ট্রে শতাধিক জিবিএস আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। এ রাজ্যেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারির একেবারে প্রথমেই সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ১৭ জন আক্রান্ত ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে অনেক শিশুও ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৭

—প্রতীকী চিত্র।

কয়েক মাসের ব্যবধানে ফের রাজ্যে ‘গিয়ে বারে সিন্ড্রোম’ (জিবিএস)-এ আক্রান্তের খোঁজ মিলল। ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে দিন পাঁচেক ভর্তি থাকার পরে এক বালক বাড়ি ফিরেছে। তবে, আরও এক জন প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভেন্টিলেশনে রয়েছে। তবে, পরিস্থিতি এখনও গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মতো জটিল হয়নি বলেই দাবি চিকিৎসকদের।

চলতি বছরের শুরুতে মহারাষ্ট্রে শতাধিক জিবিএস আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। এ রাজ্যেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারির একেবারে প্রথমেই সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ১৭ জন আক্রান্ত ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যে অনেক শিশুও ছিল। দশ বছরের একটি শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের। পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের মধ্যে থাকে, তার জন্য রাতারাতি বৈঠকে বসেছিল স্বাস্থ্য ভবনও। জানা যাচ্ছে, পার্ক সার্কাসের ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেল্‌থ’-এ সম্প্রতি দুই বালক গিয়ে বারে সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যেবোলপুরের বাসিন্দা, বছর দশেকের এক বালককে অবশ্য ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়নি। তার ক্ষেত্রে শুধু পায়ের অসাড়তা দেখা দিয়েছিল। দিন পাঁচেকের চিকিৎসার পরে ওই বালককে ছুটি দেওয়া হয়েছে।

তবে, হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা, বছর এগারোর বালককে এখনও ভেন্টিলেশন থেকে বার করা যায়নি। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ভর্তি থাকা ওই রোগীর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির ওই পড়ুয়া। তবে, তা থেকে সেরে উঠে স্কুলে যাওয়াও শুরু করেছিল। কিন্তু আচমকাই প্রথমে একটি পা এবং কয়েক দিন পর থেকে দু’টি পায়েই আর কোনও জোর পাচ্ছিল না ওই বালক। হাতও উপরের দিকে তুলতে পারছিল না। খাবার গিলতে অসুবিধা হচ্ছিল। নিজে থেকে উঠে বসতেও পারছিল না। তখন ওই বালককে পার্ক সার্কাসের হাসপাতালে নিয়ে এলে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শ্বাস নেওয়ার মাংসপেশি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় ওই বালককে প্রথম থেকেই ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছে।

ওই হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি জানাচ্ছেন, নিয়ম অনুযায়ী ওই বালককে ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। তখন প্লাজ়মা থেরাপির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রভাসপ্রসূন বলেন, ‘‘চার দিন ধরে ওই বালকের ‘প্লাজ়মাফেরেসিস’ করা হয়েছে। অর্থাৎ, চার বার ওই রোগীর শরীরের রক্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে, শারীরিক উন্নতি হতে সময় লাগবে।’’ ওই চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কোনও সংক্রমণের কারণে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে সেটি স্নায়ুতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। তাতেই শরীরের স্নায়ুগুলি ক্রমশ অসাড় হতে শুরু করে। এটিই হল জিবি সিন্ড্রোম। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার অর্থ একেবারে সুস্থ হয়ে ওঠা নয়। জিবি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মাংসপেশি পক্ষঘাতগ্রস্ত হলে পুরোপুরি সুস্থ হতে দেড়-দু’বছরও লাগতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Virus Medical

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy