Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোট বৃদ্ধির ফসল বিজেপির ঘরেই

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাধারণ ভাবে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার ক্ষেত্রেই ভোটের হার বেড়ে থাকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০৩:১৭
Share: Save:

এ বার লোকসভা নির্বাচনে ভোটারদের বুথমুখী করতে নানান পদক্ষেপ করেছিল নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবু ২০১৪ সালের তুলনায় চলতি লোকসভায় এ রাজ্যের বেশির ভাগ আসনেই ভোট পড়ার হার কম। যে-সব আসনে ভোটের হার বেড়েছিল, তার অধিকাংশই বিজেপির দখলে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে পরিসংখ্যান।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাধারণ ভাবে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার ক্ষেত্রেই ভোটের হার বেড়ে থাকে। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষেত্রে ধরাবাঁধা হিসেবের অনেকটাই এ-দিক ও-দিক হয়েছে। সেই জন্য নির্বাচন লোকসভার হলেও বঙ্গে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতাটা কাজ করেছে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটের ফলাফলে।

২০১৪ সালের নিরিখে এ বার ১.৬ শতাংশ ভোট বেড়েছে জলপাইগুড়িতে। সেখানে ১,৮৪,০০৪ ভোটে জিতেছেন বিজেপির জয়ন্ত রায়। গত বারের তুলনায় ১.৪ শতাংশ ভোট বেড়েছে কোচবিহারে। সেখানেও জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়ায় ভোটের হার পিছনে ফেলে দিয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে। সেখানে তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে দেড় লক্ষের বেশি ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপির সুভাষ সরকার। বাঁকুড়ার পাশের কেন্দ্র বিষ্ণুপুরে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ ভোট-প্রচারে এক দিনও এলাকায় ঢুকতে পারেননি। তা সত্ত্বেও তৃণমূলকে হারিয়ে জিতেছেন তিনি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে বিষ্ণুপুরে। এ বার পুরুলিয়াতেও ভোটের হার বেড়েছিল। তার সুফল তুলে দু’লক্ষের বেশি ভোটে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। গত বারের তুলনায় ভোট বেড়েছে ঝাড়গ্রামেও। বিজেপির কুনার হেমব্রম জিতেছেন সেখানে। ভোট বেড়েছে আলিপুরদুয়ারেও। সেখানে দু’লক্ষ ৪০ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা।

কিছুটা ভোট বেড়েছে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা আসনে। সেখানে ১,৫৫,১৯২ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের মালা রায়। ২০১৪ সালের তুলনায় ভোটের শতাংশের সামান্য হেরফের হয়েছে জয়নগরে। ওই কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য সাংসদ হয়েছেন তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডল। জঙ্গিপুর আসনেও সামান্য ভোট বেড়েছিল। কংগ্রেসের হাত থেকে ওই আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের খলিলুর রহমান।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ বারের ভোটে বঙ্গে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়ার মুখে পড়েছিল রাজ্যের শাসক শিবির। সে-ক্ষেত্রে বেশির ভাগ অংশে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না-পারার ক্ষোভ তো ছিলই। পাশাপাশি উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতিও কোথাও কোথাও মাথাচাড়া দেওয়ার বিষয়টি ভোটারদের বিমুখ করেছিল। ভোটবাক্সে তার অনেকটাই প্রতিফলন ঘটেছে। তবে মেরুকরণের রাজনীতি রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে হাওয়া অনেকটা ঠেকিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE