Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের ‘ঢিলেমি’, রিপোর্ট নবান্নে

বিজেপি টাকার খেলা খেলেছে বলে ভোট পর্বে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক জায়গায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারও হয়েছে।  কিন্তু তা ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’ ছিল বলে মত রাজ্য প্রশাসনের একাংশের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি  ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০৪:০৭
Share: Save:

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য পুলিশের কারও কারও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে রিপোর্টও পৌঁছেছে নবান্নের শীর্ষমহলে।

বিজেপি টাকার খেলা খেলেছে বলে ভোট পর্বে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক জায়গায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধারও হয়েছে। কিন্তু তা ‘হিমশৈলের চূড়ামাত্র’ ছিল বলে মত রাজ্য প্রশাসনের একাংশের। তাদের মতে, ভোটের সময়ে বহু জায়গায় বহিরাগতেরা ভিড় জমিয়েছিলেন। অথচ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া পুলিশকে সেভাবে ‘সক্রিয়’ হতে দেখা যায়নি। এমনকি, সতর্কতামূলক গ্রেফতারে পুলিশের ‘ঢিলেমি’ ছিল বলে তাদের দাবি। সেই সব রিপোর্টই নবান্নের শীর্ষমহলে পৌঁছছে বলে খবর। এ ক্ষেত্রে কোন কোন পুলিশ কর্মী বা অফিসার ‘নিষ্ক্রিয়’ ছিলেন, তার বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসনের একাংশ।

নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পর থেকে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ কমিশনের অধীন। তাদের কাজে সরকারের কার্যত বিশেষ ভূমিকা নেই। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক পুলিশ কর্মী-অফিসার প্রশাসনের শীর্ষস্তরের সঙ্গে ঠিকঠাক যোগাযোগ রাখেননি। শনিবার কালীঘাটের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতাও বলেছিলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনারের তত্ত্বাবধানে পুলিশ। তাঁরা আমাকে রিপোর্ট পর্যন্ত দিচ্ছে না।’’ প্রশাসনের একাংশের মতে, কোথাও উচ্চপদস্থ কর্তাদের নির্দেশ অমান্য করেছিলেন অধস্তনেরা। আবার কোথাও উচ্চপদস্থেরা নিজেদের ‘নিরপেক্ষ’ প্রমাণ করতে গিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ। নীচুতলার পুলিশ কর্মীদের একাংশের আচরণের পিছনে আবার মহার্ঘভাতা না পাওয়াও কাজ করেছে বলে মত প্রশাসনের একাংশের।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্যের ভোটের ফলে এমন বড়সড় বদল হবে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পুলিশ আগে দিলে ভাল হত!’’

ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরীর ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল ভোটপর্বে। রবিবার নির্বাচনী আচরণবিধি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা-বিধাননগর-সহ যে সব জায়গায় পুলিশ কর্তাদের বদল করেছিল নবান্ন, সেই তালিকায় ছিলেন সুনীলও। সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ভোটের আগে-পরে কয়েকজন পুলিশ কর্মী-অফিসারের সঙ্গে বিভিন্ন কথোপকথন সংক্রান্ত রিপোর্ট নবান্নে পৌঁছছে। উত্তরবঙ্গ, পশ্চিমাঞ্চল, দক্ষিণবঙ্গের কয়েকজন বিশেষ পুলিশ কর্মী-অফিসার-কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে প্রশাসনের শীর্ষস্তরে। এহেন পরিস্থিতিতে পুলিশ কর্মী-অফিসার বা কর্তাদের বদলি হবে বলে জল্পনা চলেছে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ধীরে ধীরে সব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE