ছবি: প্রতীকী
সাদা কাগজে কাঁচা হাতের লেখাটা দেখে চমকে উঠেছিলেন বড়বাবু। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘‘আমার বয়স মাত্র ১৪। মা-বাবা জোর করে বিয়ে দিচ্ছেন। শুক্রবার, ২৮ তারিখ বিয়ে। আপনারা আমাকে বাঁচান।’’
নিজের বিয়ে আটকাতে এক কিশোরী চিঠি লিখেছিল পুলিশ কাকুদের। কিন্তু লিখলেই তো হল না, থানা পর্যন্ত পৌঁছনো চাই সেই চিঠি। বেরোনো সম্ভব ছিল না পেট্রাপোলের হরিদাসপুরের বাড়ি থেকে। এক বান্ধবীকে মেয়েটি চিঠি দিয়ে বলে, কোনও উপায়ে চিঠি যেন থানার বড়বাবু পর্যন্ত পৌঁছয়।
সেই বান্ধবীও তো কখনও থানা-পুলিশের কাছে যায়নি। সাহস করে উঠতে পারেনি। শেষমেশ, এক পরিচিত ব্যক্তির মারফত চিঠি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করে। বুধবার সকালে পেট্রাপোল থানায় গিয়ে কর্তব্যরত কনস্টেবলকে গিয়ে চিঠি ধরায় ওই ব্যক্তি।
চিঠি পেয়ে থ ওসি কল্লোল ঘোষ। হাতে সময় কম। কিশোরীর খোঁজে বেরিয়ে পড়েন বাহিনী নিয়ে। অনেক খুঁজে বাড়ির হদিস মেলে। ওসি নিজে বাবা-মাকে বোঝান। বলেন, এত কম বয়সে মেয়ের দেওয়া বেআইনি। অনেক কথা খরচের পরে পরিবার বোঝে সে কথা। বাবা-মা লিখিত ভাবে পুলিশকে জানিয়েছেন, আঠারো বছর বয়স না হলে মেয়ের বিয়ে দেবেন না।
মেয়েটি ঠাকুর হরিদাস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা দিনমজুর। তিন বোনের মধ্যে সে-ই বড়। বৃহস্পতিবার মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছিলেন চাইল্ড লাইনের বনগাঁ মহকুমার কো-অর্ডিনেটর স্বপ্না মণ্ডল। তিনি তিন বোনেরই পড়াশোনার দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন।
মেয়েটি বলে, ‘‘আমি লেখাপড়া করতে চাই। বাবা-মাকে বিয়ে দিতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা আমার কোনও কথা কানেই তুলছিলেন না। শুনেছিলাম, পুলিশ কাকুরা নাকি এ সব ক্ষেত্রে পাশে দাঁড়ান। তাই সাহস করে চিঠি লিখে ফেলি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy