Advertisement
E-Paper

দু’পায়ের আঙুল, গোড়ালিতে ফোস্কা, পায়ের অসাড়তাও হয় শীতে, যত্ন না নিলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে

হাত ও মুখের যত্ন যতটা নেওয়া হয়, ততটা পায়ের ক্ষেত্রে নয়। অথচ ঠান্ডার সময়ে পায়ের নানা সংক্রমণজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। শীতের সময়ে কেবল পা ফাটার সমস্যা নয়, আঙুলের অসাড়তা, গোড়ালিতে ফোস্কা এমনকি অ্যাথলেট’স ফুটও হতে পারে। কী ভাবে পায়ের যত্ন নেবেন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫৭
How to protect your feet in cold weather

শীতে হতে পারে অ্যাথলেট’স ফুট, কী ভাবে যত্ন নেবেন পায়ের? ফাইল চিত্র।

শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় আমাদের শরীরের অন্য অংশের তুলনায় পায়ের সমস্যা একটু বেশিই দেখা দেয়। বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং সঠিক যত্নের অভাবে পায়ে নানা রকম সংক্রমণ হতে পারে। অনেকেই ভাবেন, ঠান্ডায় কেবল পা ফাটার সমস্যাই হয়। তা নয়। এগজ়িমা, ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের রোগীরা পায়ের সমস্যায় বেশি ভোগেন। গোড়ালিতে ফোস্কা, পায়ের অসাড়তা, অ্যাথলেট’স ফুট থেকে সাবধানে থাকতে হয় এই সময়ে। তাই পায়ের যত্ন নেওয়ার কিছু পদ্ধতি জেনে রাখা ভাল।

শীতে পায়ের কী কী সমস্যা হতে পারে?

ক্র্যাকড হিল

শীতের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা। গোড়ালির চামড়া শক্ত হয়ে ফেটে যায়। অনেক সময় ফাটল গভীর হয়ে রক্ত বার হয়। প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

চিলব্লেন

ঠান্ডায় পায়ের আঙুল ফুলে লাল বা নীলচে হয়ে যায়। এতে প্রচণ্ড চুলকানি এবং জ্বালা হতে পারে। পায়ের রক্তজালিকাগুলি ফুলে ওঠে। সেখানে প্রচণ্ড প্রদাহ হয়। পায়ের আঙুলের ফাঁকে ফোস্কাও পড়ে।

অ্যাথলেটস ফুট

শীতে সারা ক্ষণ মোজা ও ঢাকা জুতো পরে থাকার ফলে আঙুলের ফাঁকে ঘাম জমে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়। এটি সাধারণত ডার্মাটোফাইট নামক ছত্রাকের সংক্রমণে হয়। এতে চামড়া সাদা হয়ে যায়। র‌্যাশ, চুলকানি হতে দেখা যায়। গোড়ালির কাছে চামড়া উঠতে থাকে। পায়ে দুর্গন্ধ হয়।

জ়েরোসিস

পায়ের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে গিয়ে চামড়ায় টান ধরতে থাকে। পায়ের চামড়া কুঁচকে যেতে থাকে। অনেক সময়ে সোরিয়াসিসের মতো ছালও উঠতে শুরু করে। বেশি ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করা, ময়েশ্চারাইজ়ার না লাগানোর কারণে এই চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। আবার ডায়াবিটিস, থাইরয়েড থাকেও জ়েরোসিসের সমস্যা হতে পারে।

পায়ের যত্ন নেবেন কী ভাবে?

নারকেল তেল, অলিভ তেল কিংবা পেট্রোলিয়াম জেলি পায়ে ব্যবহার করতে পারেন ময়েশ্চারাইজ়ার হিসাবে। এতে পায়ের ত্বক নরম এবং টান টান থাকবে। তবে ময়েশ্চরাইজ়ার ব্যবহারের আগে পা গরম জলে ডুবিয়ে রেখে পামিস স্টোন দিয়ে ভাল করে ঘষে স্ক্রাব করে নিন। তার পর ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে মোজা পরে নিন।

রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পায়ের তলায় নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে মাসাজ করলে শুষ্ক ত্বক নরম হবে।

পায়ে র‌্যাশ হলে সে জায়গায় টি ট্রি অয়েল নারকেল তেলে মিশিয়ে মাখাতে পারেন। অ্যাপল সাইডার ভিনিগারেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।

বাড়ি থেকে বার হলে পায়ে সব সময় সুতির মোজা পরুন। সঙ্গে পা ঢাকা জুতো। বাড়িতেও স্লিপারের সঙ্গে সুতির মোজা পরে থাকা ভাল।

একটা কলা ভাল করে চটকে নিন। তার পর গোড়ালির ফাটা অংশে লাগিয়ে রাখুন। কলার খোসা দিয়ে মিনিট পাঁচেক ফাটা অংশটি ঘষে নিন। তার পর পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’-তিন দিন করলে ছত্রাকের সংক্রমণ হবে না।

পায়ের যত্নের পাশাপাশি নখের যত্নও নিতে হবে। নখ ঠিক ভাবে কাটতে হবে। নখ শুধু কাটলে হবে না। নখ পরিষ্কারও করতে হবে। ময়লা জমে নখের সংক্রমণ থেকেও পায়ের ত্বকও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ডায়াবিটিস থাকলে পায়ের যত্ন

দীর্ঘ দিন ধরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে স্নায়ুকোষ ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে নিউরোপ্যাথি। এর জন্য ডায়াবেটিকরা চট করে ব্যথা অনুভব করতে পারেন না। ফলে ক্ষত অলক্ষ্যে বাড়তে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার নিতে পারে যে, পা কেটে বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তাই ডায়েটের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

রোজ স্নানের সময়ে পা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। বিশেষত, পায়ের আঙুলের ফাঁকে, যেখানে ছত্রাকের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেই জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে।

বাড়ি হোক বা বাইরে, খালি পায়ে হাঁটা নয়। পাথর বা সিমেন্টের উপরে খালি পায়ে হাঁটবেন না, এতে পায়ে ফোস্কা পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

শীতকালে নিয়মিত ফুট ক্রিম বা তেল মালিশ করে পা, পায়ের পাতার ত্বক নরম রাখতে হবে।

Foot Care Tips Foot Care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy