প্রতীকী ছবি।
পেটের ব্যথায় কাতরাচ্ছিল মেয়েটা। হাসপাতালের বদলে বাড়ির লোকজন তাকে নিয়ে ছোটেন ওঝার কাছে। সেখানে বহুক্ষণ ধরে চলে ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজ। কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। এ দিকে, শরীর ভাল হওয়ারও লক্ষণ নেই। যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে এক সময়ে নিস্তেজ হয়ে আসে রোগাটে শরীরটা। যখন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, তত ক্ষণে দেহে আর প্রাণ নেই।
ক্যানিং হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘মেয়েটিকে যদি আরও কিছু সময় আগে আনা হত, তা হলে হয় তো চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যেত। কিন্তু কিছুই করা গেল না।’’ তাঁর মতে, মেয়েটির শরীরে যে সব উপসর্গ ছিল, তাতে মনে হয় কালাচ সাপে কামড়েছিল। শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়েছিল।
মমতাজ মণ্ডল (১৩) নামে ওই কিশোরীর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির ২ নম্বর গরানকাটি গ্রামে। গোপালগঞ্জ হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত সে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার স্কুলে যাওয়ার পরে ব্যথা শুরু হয় তার। সঙ্গে বমি করতে থাকে। শ্বাসকষ্টও ছিল। শিক্ষক ও বন্ধুরা মিলে বাড়ি পৌঁছে দেয় মমতাজকে।
বাড়ির লোকজন তাকে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। ওই ওঝা জানিয়ে দেয়, ঝাড়ফুঁক করলেই রোগ সেরে যাবে। সেই মতো কায়দা-কানুন সেরে, তাবিজ দিয়ে মেয়েটিকে বা়ড়ি নিয়ে যেতে বলে সে। কিন্তু বাড়ি ফিরেও ব্যথা কমেনি।
স্থানীয় এক পল্লি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় মমতাজকে। তিনি ব্যথা কমার ওষুধ দিয়ে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন ওই কিশোরীকে।
মমতাজের মা সাবিনা বলেন, ‘‘গ্রামের পাঁচজন বলেছিল, ওঝার কাছে নিয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। ঝাড়ফুঁক করার পরে দু’টি তাবিজ দেন উনি। কিন্তু কাজ হল না। হয় তো আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলেই ভাল ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy