মিজোরামে সেতু বিপর্যয়ে মৃত মালদহের ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
মালদহে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সকালে বন্দে ভারতে করে মালদহের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা তাঁর। এমনটাই খবর রাজভবন সূত্রে। বুধবার মিজ়োরামে সেতু বিপর্যয়ে মালদহের ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সেই সব শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেই রাজ্যপাল বোস মালদহে যাচ্ছেন বলে খবর মিলেছে রাজভবন সূত্রে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকাই ভেঙে পড়ে মিজ়োরামের আইজলে নির্মীয়মাণ রেল-সেতু। সেই ঘটনায় যে সব শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সকলেই মালদহের বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১১ জন শ্রমিকই রতুয়া ২ ব্লকের পুখুরিয়া পঞ্চায়েতের চৌদুয়ার গ্রামের বাসিন্দা। মৃতদের তালিকায় ইংরেজবাজারের পাঁচ, গাজল এবং কালিয়াচকের এক জন করে পরিযায়ী শ্রমিকের নাম রয়েছে। জেলার এত জন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই গ্রামগুলিতে পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি ভিড় জমান রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা। বৃহস্পতিবার ইংরেজবাজার ব্লকের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাগরপাড়ায় যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেই সময়েই সেখানে যান রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। এ বার রাজ্যপাল বোসও মালদহে যাবেন বলে খবর।
মালদহবাসীর দাবি, ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু মালদহে নতুন ঘটনা নয়। কখনও বহুতল ভেঙে, কখনও নির্মীয়মাণ সেতু কিংবা পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। সম্প্রতি করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় জেলার একাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তা-ও কেন ভিন্ রাজ্যে ছুটছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা, সে প্রশ্নই ফের উঠেছে মিজ়োরামের ঘটনার পরে। মৃত পরিযায়ী শ্রমিক সেনাউল হকের (৪৮) স্ত্রী মিলি বিবি বলেন, “ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়ে দুর্ঘটনায় বড় ছেলের কোমর ভেঙে যায়। সে কাজ করতে পারে না। তার দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। আমাদের তিন ছেলে-মেয়ে আছে।” ভিন্ রাজ্যে কাজে না গেলে আটটা পেট চলবে কী ভাবে, প্রশ্ন করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “নিজেদের কোনও জমি নেই। গ্রামে কাজও নেই। তাই ঝুঁকি নিয়ে কাজের জন্য স্বামীকে ভিন্ রাজ্যে যেতে হয়েছে।”
এ বিষয়ে মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “প্লাস্টিক, কার্পেট ক্লাস্টার জেলায় তৈরি হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে জেলায় কাজ করতে পারেন, সে জন্য ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ টাকার ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকদের যুক্ত করার কাজও চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy