Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal News

কথা বলেই ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম, কড়া বিবৃতি দিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ ওড়ালেন রাজ্যপাল

গোটা পর্বে রাজ্যপালের উদ্যোগেই যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তেজনা পুরোপুরি থেমেছে, এ দিনের প্রেস বিবৃতিতে প্রথমেই সে কথা উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:২০
Share: Save:

বৃহস্পতিবার নিজেই ময়দানে নেমেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর এই সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। শুক্রবার বিবৃতি প্রকাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর যাওয়া থেকে শুরু করে গোটা ঘটনাপর্বের ব্যাখ্যা করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল।

রাজ্য প্রশাসন কাজ করছিল না। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছিলেন উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী-মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত না পেয়েই যে তিনি পড়ুয়াদের অভিভাবক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছেন, বিবৃতিতে তা স্পষ্ট করেছেন আচার্য।

বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির উদ্যোগে আয়োজিত নবীন বরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে চরম হেনস্থার মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে পড়ুয়ারা। এক সময় উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য ক্যাম্পাস ছাড়েন। তার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা কমাতে উদ্যোগ নেন রাজ্যপাল। নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কার্যত ঘেরাও থাকার পর মন্ত্রী বাবুলকে উদ্ধার করে ক্যাম্পাস ছাড়েন।

তাঁর উদ্যোগেই যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তেজনা পুরোপুরি থেমেছে, এ দিনের প্রেস বিবৃতিতে প্রথমেই সে কথা উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। রাজভবনের বিবৃতি, গণতন্ত্রের রক্ষক রাজ্যপাল হিসিবে শুধু নয়, তিনি ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাভক হিসেবেও। কারণ পড়ুয়াদের অভিভাবক উপাচার্য, সহ-উপাচার্য কেউই সেই সময় ক্যাম্পাসে ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন এবং স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার স্বার্থেই তিনি গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেছেন আচার্য জগদীপ ধনখড়।

আরও পড়ুন: অবস্থান বিক্ষোভে এবিভিপি, মিছিল বিজেপি-এসএফআইয়ের, যাদবপুরকে ঘিরে উত্তাল শহর

কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেন? রাজভবনের বক্তব্য, রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে সমস্ত রাস্তা খোলার চেষ্টা করেছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং মুখ্যসচিব মলয় দে-র সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। কিন্তু কোনও উপায় বার হয়নি। শেষ চেষ্টা হিসাবে দিল্লিতে খাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির গুরুত্ব এবং তার জেরে কী পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। বেশ কয়েক বার দু’জনের মধ্যে কথোপকথন হয়।

কিন্তু তার পরেও কার্যত কোনও সমাধানের ইঙ্গিত না পেয়ে রাজ্যপাল নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, ইতিমধ্যেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দেরি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত বলে মনে করেছিলেন রাজ্যপাল। তাই রাজ্যপাল হিসেবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে সেই সময় তাঁর নিজেরই বিশ্ববদ্যালয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেছিলেন, বিবিৃতিতে উল্লেখ করেছে রাজভবন।

আরও পড়ুন: অর্থনীতি চাঙ্গা করতে নয়া দাওয়াই, কর্পোরেট করে ছাড়ের ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর

বৃহস্পতিবারই ঘটনায় রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করে তৃণমূলের তরফে একটি বিবৃতি জারি করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপাল সরকারকে না জনিয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বলে সেই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। এই বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে তাঁর যে কথোপকথন হয়েছিল, নিশ্চয়ই উনি (তৃণমূলের মহাসচিব) সেটা জানতেন না। তৃণমূলের ওই বিবৃতির বক্তব্য সঠিক নয় বলেও রাজভবনের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে রাজ্যপালের বক্তব্য, অভিভাবক হিসেবে পড়ুয়াদের জন্য তাঁর দরজা সব সময়ই উন্মুক্ত। আলোচনাই একমাত্র ছাত্রছাত্রীদের উদ্বেগের সমাধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করতে পারে। তিনি যে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গ কথা বলতে মুখিয়ে আছেন, সে কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন আচার্য জগদীপ ধনখড়। পাশাপাশি এ দিনের বিবৃতিতেও রাজ্যপাল কেন ক্যাম্পাস ছেড়েছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছন রাজ্যপাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE