Advertisement
০২ মে ২০২৪

এটিএম লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে প্রৌঢ়ের মৃত্যু, মোদীকে কটাক্ষ মমতার

এটিএমের লাইনে জনা দশেকের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক প্রৌঢ়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

কল্লোল রায়চৌধুরী

কল্লোল রায়চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যান্ডেল শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৯
Share: Save:

এটিএমের লাইনে জনা দশেকের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক প্রৌঢ়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ব্যান্ডেলে। পুলিশ জানায়, এ দিন এটিএমের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন কল্লোল রায়চৌধুরী (৫৩)। তিনি আদতে কলকাতার বাসিন্দা। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে কাজের সূত্রে থাকতেন কোচবিহারে। ফি শনিবার বেহালার আদর্শনগরের বাড়িতে ফিরতেন। এ দিনও ব্যান্ডেলে নেমে হাওড়াগামী লোকাল ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর। হাতে কিছুটা সময় থাকায় স্টেশন-সংলগ্ন একটি এটিএমের লাইনে দাঁড়ান।

ঘটনাটি নিয়ে পরে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্লোলবাবুর পরিবারকে সমবেদনা জানান তিনি। এই প্রসঙ্গেই নোট-কাণ্ডে দেশবাসীর ভোগান্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মোদীবাবু, শুনতে পাচ্ছেন!’’

কী হয়েছিল এ দিন?

এটিএমের রক্ষী অসিত বিশ্বাস জানান, সকাল তখন প্রায় ৭টা। কল্লোলবাবু জনা দশেকের পিছনে দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ বসে পড়েন। অসিতবাবুর কথায়: ‘‘উনি অসুস্থ বোধ করছেন বুঝতে পেরে আমরা কয়েক জন ঘা়ড়ে-মাথায় জলের ছিটে দিই। ওঁকে শুইয়ে দেওয়া হয়।’’ কিন্তু, ওই পর্যন্তই! অভিযোগ, অসুস্থ কল্লোলবাবুর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেননি কেউ। এটিএমের সামনে তখন দীর্ঘ লাইন। মাসের প্রথমেই টাকা তোলার হিড়িক। কিন্তু, তাতে খুঁজে পাওয়া যায়নি কোনও মানবিক মুখ। অসুস্থ কল্লোলবাবুকে পাশ কাটিয়েই এটিএমে ঢুকেছেন লাইনে অপেক্ষারত মানুষেরা। একের পর এক সহ-নাগরিক তাঁদের প্রয়োজন মিটিয়ে ফিরে গিয়েছেন নিজেদের বাড়িতে। কিন্তু, কল্লোলবাবুর দিকে ফিরে চাননি কেউ।

কল্লোলবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। খবর যায় ব্যান্ডেল জিআরপি-র কাছে। পুলিশও আসে। কল্লোলবাবুকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ওই প্রৌঢ়। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে।

কল্লোলবাবুর দাদা স্বপন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গত পনেরো বছর ধরে ভাই কোচবিহারে রয়েছে। আগে মাসে দু’দিন আসত। ছেলের পরীক্ষার জন্য ইদানীং প্রতি শনিবার বাড়ি ফিরত। হয় তো ভেবেছিল, কলকাতার এটিএমে প্রচুর লাইন পড়ে। ব্যান্ডেল থেকেই টাকাটা তুলে নিয়ে যাবে। কিন্তু কী যে হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM Line Elderly dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE