বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ কংগ্রেসের বন্ধ সমর্থনকারীদের।
গ্রেফতার হওয়া বন্ধ সমর্থকদের ছাড়াতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক আব্দুর বারির সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের একাংশের কথা কাটাকাটির অভিযোগ উঠল বর্ধমানে। অভিযোগ, আব্দুরকে মারধরও করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ সবং ও কেতুগ্রাম কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা বাংলা বন্ধে কংগ্রেস সমর্থকরা বর্ধমান-কাটোয়া রোডের রেল ওভারব্রিজের কাছে পুরনো জিটি রোডে জমা হন। অবরোধের জেরে যানজট তৈরি হয় রাস্তায়। শেষমেশ বর্ধমানের আইসি প্রিয়ব্রত বক্সির নেতৃত্বে পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়। গ্রেফতার করা হয় ১৬ জন অবরোধকারীকে। এরপরেই বন্ধ সমর্থকদের ছাড়ানোর জন্য বর্ধমান থানায় যান কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থানার সামনেই প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক আব্দুর বারির সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের কথা কাটাকাটি হয়। আব্দুর বারিকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘‘পর্যবেক্ষক হয়ে ঘরে বসে আছেন, আর আমরা রাস্তায় নেমে মার খাচ্ছি।’’ শেষমেশ আব্দুর বারি রানিগঞ্জ চৌমাথায় একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁর অভিযোগ, “জেলা কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই আমাকে এ ভাবে হেনস্থা হতে হল।’’
এ ছাড়া শহরের ভিতর রিকশা, টোটো, টাউন সার্ভিস বাস চলে, কিন্তু যাত্রীর সংখ্যা তেমন ভাবে চোখে পড়েনি। যাত্রীরা জানান, বাস না থাকায় পিক আপ ভ্যান, মোটর ভ্যান, ছোট মালবাহী গাড়িতেই যাতায়াত করতে হয়। রেল লাইনে বন্ধ সমর্থকেরা বসে পড়ায় বর্ধমান স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে হাওড়াগামী চম্বল এক্সপ্রেস ও মালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। পরে অবশ্য রেল সুরক্ষা বাহিনী ও রেল পুলিশের অনুরোধে স্টেশন অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
কালনায় সুনসান রাস্তাঘাট।
কাটোয়ায় দোকানপাট সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাটেও খুব একটা লোকজন চোখে পড়েনি। সকাল ৮টা নাগাদ বর্ধমান-কাটোয়া রোডের শ্রীখণ্ডে কংগ্রেস কর্মীরা একটি সরকারি বাস আটকে দেন বলে জানা গিয়েছে। বাস আটকানোর জন্য গ্রেফতার করা হয় শ্রীখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান দীপক মজুমদার-সহ পাঁচ জনকে। দীপকবাবু এ দিন বিকেলে দাবি করেন, ‘‘কাটোয়া শহরের মানুষ এ ভাবে বন্ধে সাড়া ভাবতে পারিনি।”
কাটোয়া স্টেশনে আর পাঁচটা দিনের মতোই ট্রেনে ওঠার ভিড়।
মেমারি ও কালনাতেও এ দিন অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে কালানার চকবাজারে সব্জি ও মাছের বাজার খোলা ছিল। মেমারির বামুনপাড়া মোড়ে বেশ কয়েকটি দোকান খোলা ছিল। কালনায় হাতে গোনা কয়েকটি বাস সকালের দিকে চললেও যাত্রী না মেলায় পরে বাসগুলি তুলে নেওয়া হয়। নবদ্বীপ-কালনা রুটে সমুদ্রগড়ে রাস্তা অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকেরা।
বর্ধমান শহরে এ দিন ২৫ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। জেলাশাসক জানান, সরকারি দফতরে ৯৮ শতাংশ কর্মীই উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার উদিত সিংহ, অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও মধুমিতা মজুমদারের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy