একটি বাস টার্মিনাসের মূল ভবনের পিলার তোলা হয়েছে। ইটের গাঁথনি উঠেছে কয়েকফুট। তবে কাজ শেষ হয়নি। অন্য বাস টার্মিনাসের পাঁচিল তোলা, দেওয়াল গাঁথা চলছে। কাজ বাকি সেখানেও। এসবিএসটিসির এই দু’টি বাস টার্মিনাসের একটি পুরুলিয়ার মানবাজারে, অন্যটি বান্দোয়ানে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দুই বাস টার্মিনাসের ‘ভার্চুয়াল’ উদ্বোধন করায় বেধেছে বিতর্ক। কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।
পুরুলিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেকে একটা প্রকল্প এক দিনে উদ্বোধন করে ‘পাবলিসিটি’ পাওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের এত কাজ হয় যে এক সঙ্গে এক গুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে হচ্ছে। আগেও আমাদের সরকার অনেক বাস টার্মিনাস করেছে। উন্নয়নের ঘাটতি নেই।’’
যদিও বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর টিপ্পনী, ‘‘ভোটের তাগিদে অসম্পূর্ণ বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এখন খড়কুটো যা পাচ্ছেন, আঁকড়ে ধরছেন। তাই অসম্পূর্ণ কাজেরও উদ্বোধন করছেন।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিবহণ দফতর থেকে টার্মিনাস তৈরির কাজ হচ্ছে। মানবাজারের জন্য ৫৭.৫১ লক্ষ, বান্দোয়ানের জন্য ৯৮.৩৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দু’টি কাজই শুরু হয়েছে কয়েকমাস। কিন্তু অসম্পূর্ণ অবস্থায় সেগুলি উদ্বোধন করা হল কেন?
পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজ়ের। এসডিও (মানবাজার) শুভজিৎ বসু বলেন, ‘‘বাস টার্মিনাসগুলির কাজের বিষয়ে কিছু জানি না।’’ তবে প্রশাসন সূত্রের দাবি, ভোট ঘোষণা হলে নির্বাচনী আচরণবিধির জন্য বাস চালু করা যাতে আটকে না যায়, সে জন্য কাজ কিছুটা এগিয়ে রাখা হল।
মানবাজারের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, বান্দোয়ানে স্থানীয় বিধায়ক তথা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ডিরেক্টর রাজীবলোচন সরেন। রাজীববাবু দাবি করেন, ‘‘দু’টি বাস টার্মিনাসের কাজ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। বান্দোয়ানে জমির সমস্যা থাকায় দেরি হয়েছে। তবে মানবাজারের কাজ এগিয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই দু’টি টার্মিনাস থেকে বাস চলাচল শুরু করে দেব।’’ সন্ধ্যারানির মন্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলে সরকারি বাস চালু করেছেন, টার্মিনাসও করছেন। ভাল কাজ বিরোধীদের নজরে পড়ে না।’’