Advertisement
E-Paper

বাগানে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ

বসিরহাটের উত্তর বাগুন্ডি গ্রামের সুপর্ণা মণ্ডলকে (১৮) খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডলকে। তবে মূল অভিযুক্ত দেওর সুরজিৎ মণ্ডল ও শ্বশুর নারায়ণ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৫
সুপর্ণা মণ্ডল।

সুপর্ণা মণ্ডল।

মেয়ে-জামাইয়ের জন্য পুজোর জামাকাপড় কিনে রেখেছিলেন দিনমজুর বাবা। বিকেলে মেয়ে ফোনে বলেছিল, ‘‘শনিবার সকাল সকাল যাব বাড়িতে।’’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই মেয়েরই মৃত্যুর খবর এল। জানা গেল, শ্বশুরবাড়ির বাগানের গাছে, গলায় দড়ি দেওয়া দেহ ঝুলছিল।

বসিরহাটের উত্তর বাগুন্ডি গ্রামের সুপর্ণা মণ্ডলকে (১৮) খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডলকে। তবে মূল অভিযুক্ত দেওর সুরজিৎ মণ্ডল ও শ্বশুর নারায়ণ পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে সুপর্ণাকে উত্যক্ত করত দেওর। কুপ্রস্তাব দিত। স্বামী-শ্বশুরকে ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন সুপর্ণা। ‘একটু মানিয়ে গুছিয়ে নাও’— উপদেশ দিয়েছিলেন শ্বশুর।

দমদমের শ্রাবন্তী শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারের মুখে দাঁতে দাঁত চেপে মাস ছ’য়েক সংসার করতে পেরেছিলেন। কিন্তু বসিরহাটের সুপর্ণার মৃত্যু হল বিয়ের সাড়ে তিন মাস গড়াতে না গড়াতেই। সুপর্ণার বাপের বাড়ি বসিরহাটেরই দক্ষিণ মথুরাপুরের কাঁটাপুকুরে। তাঁর কাকা পাঁচু মণ্ডল বলেন, ‘‘সুপর্ণার সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হতে চেয়েছিল সুরজিৎ। আমাদের মেয়ে তাতে রাজি হয়নি। এতে সুরজিতের জেদ আরও বেড়ে যায়। বৌদির গালে একবার কামড়েও দিয়েছিল।’’ সুপর্ণার বাড়ির লোকের অভিযোগ, অত্যাচার চালিয়ে খুন করে মেয়ের দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

সুরজিতের আচরণ দুই পরিবারের অজানা ছিল না। প্রসেনজিতের দাবি, স্ত্রী নালিশ করায় ভাইকে চড়-থাপ্পড়ও মেরেছিলেন। দিন কয়েক আগে হাঁড়ি আলাদা করে নেন। তবে শুক্রবার রাতে ঘটনার সময়ে বাড়ি ছিলেন না। কী হয়েছে, তিনি জানেন না।

১৮ এপ্রিল বিয়ে হয়েছিল সুপর্ণার। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ তরুণী বিয়ের পরেই বুঝতে পারেন, দেওরের কুনজর পড়েছে। জানিয়েছিলেন, নানা অছিলায় তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ খোঁজে নেশায় চুর সুরজিৎ।

বাবা-মাকে সব কথা জানিয়েছিলেন সুপর্ণা। তাঁদের পরামর্শে দিন কয়েক আগে স্ত্রীকে নিয়ে একই বাড়িতে আলাদা রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করেন প্রসেনজিৎ।

কিন্তু তাতেও মিলল না রেহাই।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে বাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় সুপর্ণাকে। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালেই জ্ঞান হারান স্বামী। পরে অবশ্য তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে সুপর্ণার বাবা সুশান্ত মণ্ডল, মা সোমা বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন। দিনমজুরি করে মেয়েকে বড় করেছিলেন সুশান্তবাবু। বললেন, ‘‘শনিবার মেয়ে-জামাইকে নিমন্ত্রণ করেছিলাম। পুজোর জামা, একটা শো-কেস কিনে রেখেছিলাম ওদের জন্য। শুক্রবার বিকেলেও মেয়ে ফোনে বলল, সকাল সকাল আসবে। আর রাতেই ওর মৃত্যুর খবর এল।’’

Death Suicide Girl Hanged সুপর্ণা মণ্ডল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy