সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ছবি: পিটিআই।
সতর্কবার্তা আর বিমানবন্দরে সীমাবদ্ধ রইল না। ‘নোভেল করোনাভাইরাস’-এর মোকাবিলায় নেপাল থেকে দার্জিলিংয়ে ঢোকার রাস্তায় নজরদারি চালানোর জন্য শনিবার নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্যভবন। চিনা ভাইরাসে নেপালে এক ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এর পরই এ দিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ছ’দফা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে খবর, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চিনের ৫৭১ জন বাসিন্দার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর নথিভুক্ত হয়েছে। এঁদের মধ্যে ৩৭৫ জনই চিনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। এ পর্যন্ত সে দেশে নোভেল করোনাভাইরাসে মৃতের নথিভুক্ত সংখ্যা হল ১৭ জন।
এই পরিস্থিতিতে সপ্তাহখানেক আগে বিভিন্ন রাজ্যকে সতর্ক থাকার জন্য চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যার প্রেক্ষিতে বিমানবন্দরগুলিতে নজরদারি চলছিল। কিন্তু নেপালে আক্রান্তের খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আজ, রবিবার থেকে দার্জিলিংয়ের পানিট্যাঙ্কি, মিরিকসীমানা এবং পশুপতি বাজারে স্বাস্থ্যশিবির খোলা হবে। পাশাপাশি মিরিকের ওকাইটি এলাকাতেও রাখা হবে নজরদারি। নেপাল থেকে এ রাজ্যে ঢোকার সময় কারও করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করবেন শিবিরের চিকিৎসকেরা।
আরও পড়ুন: ভিডিয়োয় কণ্ঠস্বর উপাচার্যের নয়, বলছে বিশ্বভারতী
পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে খোলা হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ড। সেখানে আপাতত ৬টি শয্যা রাখা হচ্ছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার কৌশিক সমাজদার। করোনাভাইরাস নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে মাইকে ঘোষণা এবং পর্যাপ্ত ব্যানার দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। দিনচারেক আগে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ঠিক হয়েছে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী-চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে নজরদারি চালাবেন। প্রয়োজনে তাঁরা জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
স্বাস্থ্যভবনের এক আধিকারিক জানান, এক গোত্রের অনেকগুলি ভাইরাস হল করোনাভাইরাস। চিনে যে ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে তা বৃহত্তর করোনাভাইরাসের একটি ধরন। জ্বর, সর্দিকাশির পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট হল এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। ভাইরাস শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার নজিরও রয়েছে। বন্য পশু সাধারণত এই ভাইরাসের বাহক হয়। চিনের ‘হুয়ানান সি-ফুড মার্কেট’ থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘এক জনের দেহ থেকে অন্যের দেহে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ প্রথমে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এখন সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy