সোয়াইন ফ্লু ছড়াচ্ছে গোটা দেশে। দু’দিন আগেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নির্দেশিকায় সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সব রাজ্যকে। কিন্তু ওই রোগে পশ্চিমবঙ্গের কী পরিস্থিতি সে সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। গত বছর অগস্ট থেকে দিল্লিকে সোয়াইন ফ্লু নিয়ে তথ্য পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন। ডেঙ্গির ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটছে আগে থেকেই। ফলে সোয়াইন ফ্লুয়ে রাজ্যের ছবি এখন কী, তা নিয়ে অন্ধকারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তথ্য গোপনের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
দেশের বেশ কিছু এলাকায় ভাল রকম ছড়িয়ে পড়েছে সোয়াইন ফ্লু। রাজস্থানে ইতিমধ্যেই ৮৫ জন মারা গিয়েছেন সরকারি হিসেবে। গুজরাত ও পঞ্জাবে মারা গিয়েছেন ৪৩ ও ৩০ জন। রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গোটা দেশে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সূদনের নেতৃত্বে বৈঠকে বসেছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বৈঠকে রাজস্থান, গুজরাত ও পঞ্জাবে অতিরিক্ত দল পাঠানো ও সমস্ত রাজ্যকে সোয়াইন ফ্লু সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশিকা জারির সিদ্ধান্ত হয়। এই রোগ যাতে শুরুতেই চিহ্নিত করা যায়, জোর দেওয়া হয়েছে তার উপরেও।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, গত অগস্ট মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গে সোয়াইন ফ্লু-তে এ বছর ক’জন আক্রান্ত হয়েছেন বা মারা গিয়েছেন, তা নিয়ে তথ্য নেই কেন্দ্রের কাছে। পশ্চিমবঙ্গের এই ধরনের অসহযোগিতা এই প্রথম নয়। অতীতে ডেঙ্গির তথ্য না-পাঠানোরও অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে শেষ ডেঙ্গি আক্রান্তদের তথ্য পাঠিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। এ বার সোয়াইন ফ্লু নিয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে মমতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, রাজ্য প্রশাসনের অসহযোগিতার ফলে দিল্লি থেকে কিট, ওষুধ পাঠানোর মতো কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রশ্নে ক্ষতি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গেরই। বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন রাজ্যের মানুষ। স্বাস্থ্য প্রশ্নে অবনতি হচ্ছে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘তথ্য গোপনের অভিযোগ ঠিক নয়। সময় মতো রাজ্য তথ্য দিল্লিতে পাঠায়। তবে সোয়াইন ফ্লু আক্রান্তের মৃত্যুর নথি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তার পরেই তথ্য পাঠানো হয়।’’ কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কর্তাদের প্রশ্ন, সব রাজ্য তথ্য যদি প্রতি মাসে দিল্লিতে পাঠাতে পারে, তা হলে পশ্চিমবঙ্গের সমস্যাটা কোথায়? কেন বাড়তি সময় লাগবে? কেন গত বছরের তথ্য এখনও এসে পৌঁছয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। মন্ত্রকের আশঙ্কা, তথ্য না পাঠিয়ে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন রাখতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy