বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রক। তাদের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের ক্ষেত্রেও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কড়াকড়ি বেড়েছে।
জাহাজ মন্ত্রকের সচিব টি কে রামচন্দ্রন শুক্রবার দেশের বিভিন্ন বন্দরের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে বসেন। সেখানে কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বলের কর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানেরা ছিলেন। বৈঠকে বন্দরগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তার পরেই কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান রথেন্দ্র রমন এ নিয়ে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেন। বন্দরে দিন-রাত সতর্কতা বজায় রাখার পাশাপাশি যাবতীয় কাজকর্মে কড়া নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। বন্দর পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৪ মে, সব রকম ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অতিরিক্ত কর্মীদের সদর দফতরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বন্দরের কোনও ডক খালি করার প্রয়োজন হলে সেই প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়েছে।
কোথাও সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্দরে কর্মী ও আধিকারিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করা হচ্ছে। উপযুক্ত পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। বন্দরের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানান, সেখানে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি হয়েছে। বন্দর সুরক্ষিত রাখতে কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে মহড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, সব রকম ভাবে নজরদারি এবং সতর্কতা বজায় রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। বন্দরে আসা জাহাজে পণ্য ওঠানামা-সহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড সুরক্ষা এবং নজরদারির ঘেরাটোপে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর পাশাপাশি, পূর্ব রেলও তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করার কথা জানিয়েছে। সাধারণ রেলরক্ষী বাহিনী এবং রেল পুলিশ ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করার কথা জানানো হয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনের প্রবেশপথে যাত্রীদের ব্যাগ এবং অন্যান্য উপকরণ পরীক্ষা করা ছাড়াও ট্রেন পরিচ্ছন্ন করার ইয়ার্ড, রেললাইন-সহ সর্বত্র নিরাপত্তা এবং নজরদারি বাড়াচ্ছে রেল। সেই জন্য রেলওয়ে ট্র্যাক, সেতু, সিগন্যাল ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত কর্মীদের বিশেষ ভাবে সচেতন করা হচ্ছে।
যাত্রীদের ক্ষেত্রেও সতর্কতা বজায় রাখার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। কোথাও কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখলেই তা সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে বলা হয়েছে। স্টেশনগুলিতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি, সব রকম আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাহিনীর সদস্যদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)