প্রতীকী ছবি।
বিদেশের বাজারেই বাংলার মধুর কদর সবথেকে বেশি। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণে সেই রফতানির বাজারে জায়গা হারাচ্ছে বাংলা। সংশ্লিষ্ট শিল্প সূত্রে খবর, প্রচুর পরিমাণে মধু উৎপাদন করার পরে বিক্রি করতে পারেননি রাজ্যের প্রায় ৩০ হাজার মৌমাছি পালক।
অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম ভারতের শুল্ক সংক্রান্ত স্নায়ু-যুদ্ধও রফতানির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতীয় মধুর সবথেকে বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রায় ৬৮ শতাংশ মধু ওই দেশে রফতানি করা হত বলে দাবি মধু রফতানিকারক সংস্থাগুলির। দিল্লির একটি রফতানিকারক সংস্থার শীর্ষ কর্তার কথায়, একা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ভারত থেকে বছরে ৮২-৯০ হাজার টন মধু আমদানি করে।
মার্কিন মুলুক-সহ ইওরোপের বিভিন্ন দেশও অ্যান্টিবায়োটিকের ভয়ে আমদানি করছে না। মধু রফতানি করা হত কানাডা, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীতেও। দীর্ঘদিন ধরেই এ রাজ্যের মৌমাছি পালকদের থেকে মধু কিনে এ সব দেশে নিয়ে রফতানি করত উত্তর ভারতের সংস্থাগুলি। তাঁদের
দাবি, নিয়মকানুন মেনে উৎপাদন হচ্ছে কি না, তা দেখার পরিকাঠামোগত উপায় নেই। ফলে ব্যবসা করাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
মধু কথা
• রাজ্যে ২০-২৫ হাজার টন মধু উৎপাদন
• ৩০ হাজার মৌমাছি পালক
• মোট মধু উৎপাদনের ৫০-৬০ শতাংশ বিদেশে রফতানি হয়
• পশ্চিমবঙ্গ থেকে সবথেকে বেশি মধু যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
আর এই জোড়া সমস্যায় রফতানির চাহিদা তলানিতে ঠেকেছে। অন্য দিকে, দেশের বাজারে তেমন চাহিদা নেই বলে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের দাবি। সব মিলিয়ে দাম পড়ছে মধুর। সুন্দরবনের অন্যতম ভাল মধুর দাম ১৬০ টাকা প্রতি কেজি থেকে নেমে ৯০-১০০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। প্রায় অর্ধেক দাম হয়ে গিয়েছে সর্ষে, লিচু, তিল— এই সমস্ত মধুর দামও। পশ্চিমবঙ্গ মৌমাছি পালক সমিতির সম্পাদক তরুণ হালদারের দাবি, উৎপাদন বাড়লেও, রফতানির জন্য যে সমস্ত সংস্থা মৌমাছি পালকদের কাছ থেকে মধু কেনে তারাও শুল্ক-সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে কেনা অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনাতে কমপক্ষে পাঁচ-সাত হাজার মেট্রিক টন মধু অবিক্রিত অবস্থায় মৌমাছি পালকদের ঘরে জমে রয়েছে।
বিপদ জেনেও কেন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়?
এক শ্রেণির পালকরা মৌমাছিদের রোগ ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাইয়ে থাকেন। রানি মৌমাছি যাতে বেশি করে ডিম পাড়ে তার জন্য ‘অক্সিটেট্রাসাইক্লিন’ নামে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। ব্যবসা বাঁচাতে এ বার মৌমাছি পালক সমিতির তরফ থেকে সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy