Advertisement
১১ মে ২০২৪

বিষমদ কাণ্ডে আমৃত্যু সাজা খোঁড়া বাদশার

বিষমদ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নুর ইসলাম ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। বাকি তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে।

আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজা খোঁড়়া বাদশা

আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজা খোঁড়়া বাদশা

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯
Share: Save:

বিষমদ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নুর ইসলাম ফকির ওরফে খোঁড়া বাদশাকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। বাকি তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছে।

২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর বিষাক্ত চোলাই খেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট, উস্তি, মন্দিরবাজারে ১৭২ জনের মৃত্যু হয়। উস্তি থানায় দায়ের হওয়া মামলায় শুক্রবার দোষীদের সাজা শুনিয়েছেন আলিপুর আদালতের ষষ্ঠ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী। সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে আচার-আচরণ খতিয়ে দেখে কারাবাসের মেয়াদ অনেক সময় কমে। কিন্তু আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই।

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আলিপুর আদালতের সিঁড়িতে ক্র্যাচে ভর দিয়ে উঠতে উঠতে খোঁড়া বাদশা অবশ্য বলে, ‘‘আমি কোনও মদের ব্যবসাই করতাম না। ভাত-রুটির হোটেল চালাতাম। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

এজলাসের বাইরে তখন অভিযুক্তদের আত্মীয়দের ভিড়। বিচারকের কাছে শাস্তির মাত্রা কমানোর আবেদন করেন দোষীদের আইনজীবীরা। বিচারক লিখিত আবেদন করার নির্দেশ দেন।

যাবজ্জীবন সাজা দুখে লস্কর, নজরুল লস্কর এবং‌ খইরুল লস্করের।

বেলা দেড়টা নাগাদ ফের মামলা ওঠে এজলাসে। সাদা জামা, চেক লুঙ্গি, পালিশ করা কালো জুতো পরে আদালত কক্ষের পিছনের বেঞ্চে বসে থাকতে দেখা যায় খোঁড়া বাদশাকে। বেলা পৌনে ২টো নাগাদ বিচারক সাজা ঘোষণা করেন। কিছু ক্ষণের জন্য চোখ ছলছল করে ওঠে বাদশার। এক আইনজীবী এসে বলেন, ‘‘অত ভাববেন না। আমরা হাইকোর্টে যাব।’’ যা শুনে বিরক্ত মুখে বাদশা বলে, ‘‘ওখানে তো শুনেছি, অনেক খেলা হয়। এখানে সাত বছর ধরে নানা খেলা দেখলাম। ওখানে বড় ব্যাপার। বড় খেলা হবে।’’

বাদশার পিছনেই দাঁড়িয়ে আরও তিন দোষী দুখে লস্কর, খইরুল লস্কর ও নজরুল নস্কর। খইরুল বলে, ‘‘যাবজ্জীবন সাজা দেওয়ার কী দরকার ছিল। ফাঁসি দিলেই তো পারত। এক বারে ঝামলা মিটে যেত।’’

সাজা ঘোষণার পরে কিছু ক্ষণ বেঞ্চিতেই বসে ছিল বাদশা। নিজের আইনজীবীদের ডেকে বলে, ‘‘রায়ের কপিটা নাও। এত দিন অনেক টাকা খরচ করে ওটা পেলাম। হাতে হাতে নিয়ে যাব।’’

খোঁড়া বাদশার আইনজীবী আবু বক্কর ঢালি জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন। মামলার সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় ও শান্তনু দত্তদের বক্তব্য, যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ রয়েছে, তাদেরই সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। বাকিদের বেকসুর খালাস করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hooch tragedy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE