E-Paper

জনসচেতনতায় রক্ষা ময়ূরী কাছিমের

লোকগাথা বলে, বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার কূর্ম এই ময়ূরী কাছিম। পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় অববাহিকার জলাভূমিগুলিতে এই কচ্ছপ বেশি দেখতে পাওয়া যায়। গত শুক্রবার একটি ময়ূরী কাছিম বা ধুম কাছিমকে উদ্ধার করা হয় আমতার খাল্লা গ্রাম থেকে। আর একটি উদ্ধার হয় পানশিলা গ্রামে।

মিলন হালদার

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:১৬

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

তারা বিপন্ন প্রজাতির তালিকায়। সম্প্রতি সেই বিরল প্রজাতির দু’টি ময়ূরী কাছিম উদ্ধার হয়েছিল হাওড়ার আমতায়। হাওড়ার যৌথ মঞ্চের সদস্যরা কাছিম দু’টিকে ফের পরিবেশে ফিরিয়ে দিয়েছেন। যৌথ পরিবেশ মঞ্চের আমতা ইউনিটের কোঅর্ডিনেটর দীপঙ্কর পোড়েল জানান, সাধারণ মানুষের সচেতনতার কারণেই বিরল প্রজাতির এই কচ্ছপ দু’টিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

লোকগাথা বলে, বিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার কূর্ম এই ময়ূরী কাছিম। পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় অববাহিকার জলাভূমিগুলিতে এই কচ্ছপ বেশি দেখতে পাওয়া যায়। গত শুক্রবার একটি ময়ূরী কাছিম বা ধুম কাছিমকে উদ্ধার করা হয় আমতার খাল্লা গ্রাম থেকে। আর একটি উদ্ধার হয় পানশিলা গ্রামে। আমতার গাজিপুরের বাসিন্দা অনিন্দ্য দেনের মাসির বাড়ি খাল্লাতে। মাসির বাড়ি বেড়াতে গিয়ে তিনি দেখেন ওই ময়ূরী কাছিমটি বিক্রি করছেন এক ব্যক্তি। স্থানীয় জলাশয় থেকে প্রাণীটিকে ধরেছিলেন তিনি। অনিন্দ্য কাছিমটিকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁকে সেটি দিতে রাজি হননি বিক্রেতা। বিরল এই কাছিমটিকে বাঁচাতে তাঁর কাছ থেকে ৩০০ টাকা দামে ওই কচ্ছপটি কিনে নেন অনিন্দ্য। তার পরে খবর দেন দীপঙ্করকে।

অপর কাছিমটিকে পানশিলা গ্রামের এক বাসিন্দা দেখতে পান। প্রাণীটিকে তিনি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পেশায় স্কুল শিক্ষক তথা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য পিন্টু বাগকে জানান। পিন্টুর কাছ থেকে খবর পেয়ে দীপঙ্কর ওই ময়ূরী কাছিমটিকে নিয়ে আসেন। কাছিম দু'’টি উদ্ধারের খবর দেওয়া হয় বন দফতরকেও।

দীপঙ্করের কথায়, ‘‘নদী, জলাশয়ের দূষণ ও বাস্তুতন্ত্রের অবক্ষয়ের জন্য ময়ূরী কাছিমরা ডাঙায় উঠে আসছে। এ ছাড়া চোরাশিকারের জন্যও তারা আজ বিপন্ন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সমস্ত বিষয় এবং বন্যপ্রাণ নিয়ে আমরা স্কুল, কলেজ, বিভিন্ন পাড়ায় সচেতনতা প্রচার চালাই। এই লাগাতার প্রচারের ফলে সাধারণ মানুষও এখন আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন। এটা আশার কথা। মানুষের এই সচেতনতার কারণেই এই বিরল কচ্ছপ দু'’টিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, এই ধরনের কাছিম ধরা, মারা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।উদ্ধার হওয়া ময়ূরী কচ্ছপ দু’টিকে এনে বাড়ির শৌচাগারের জলের চৌবাচ্চায় রেখে তাদের শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করেন দীপঙ্কর। শনিবার প্রাণী দু’টিকে আমতার জলাশয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গত তিন-চার বছরে বন্যপ্রাণী বিষয়ে মানুষের সচেতনতা অনেকখানি বেড়েছে বলে মানছেন হাওড়ার নগর এলাকার রেঞ্জ অফিসার হুমায়ুন কবীরও। তিনি বলেন, ‘‘এখন যে কোনও ধরনের প্রাণী এলাকায় ঢুকলেই সাধারণ মানুষ আমাদের খবর দিচ্ছেন। আগে প্রাণী উদ্ধার অনেক কম হত। এখন দিনে ২৮-৩০টি প্রাণী উদ্ধার হয়। ফলে সাপ, কচ্ছপ, হনুমানের মতো প্রাণীদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tortoise Howrah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy