Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TMC

তোলাবাজি ও প্রতারণায় অভিযুক্ত তৃণমূলের সোনা

ভোটের আগে ডানলপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আয়োজনের দায়িত্বে পুরোভাগে ছিলেন তিনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুশান্ত সরকার 
বাঁশবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২১ ০৭:৫৯
Share: Save:

জমি কিনিয়ে দেওয়ার নাম করে ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঁশবেড়িয়ার তৃণমূল নেতা সত্যরঞ্জন ওরফে সোনা শীল এবং তাঁর দুই শাগরেদের বিরুদ্ধে। শনিবার ওই অভিযোগ পেয়েই অনুপ আইচ ওরফে অম্বা এবং অম্লান কাঞ্জিলাল নামে সোনার ওই দুই শাগরেদকে তোলাবাজি এবং প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে মগরা থানার পুলিশ। তবে, সোনাকে ধরা হয়নি।

সোনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এই প্রশ্নে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও উত্তর মেলেনি হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের আধিকারিকদের কাছে। তাঁরা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।

সোনা বাঁশবেড়িয়ার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা পুর-প্রশাসক অরিজিতা শীলের স্বামী। দলীয় কোনও পদ না-থাকলেও বাঁশবেড়িয়া পুর-এলাকায় সোনাই তৃণমূলের ‘সর্বেসর্বা’ হিসেবে পরিচিত। দলের তাবড় নেতাদের তিনি ঘনিষ্ঠ বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এ হেন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঘিরে বাঁশবেড়িয়ায় শাসক দলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানছেন না সোনা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার নামে কেউ যদি টাকা তোলে, তার দায় আমি নেব না।’’ স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে অরিজিতার প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

সোনা বা অরিজিতা যা-ই দাবি করুন, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জলঘোলা শুরু হয়েছে। দলের বাঁশবেড়িয়া শহর সভাপতি প্রশান্ত দাস বলেন, ‘‘সত্যরঞ্জনের ঘনিষ্ঠরা বহু মানুষের থেকে বেআইনি পথে টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আমার কাছেও বেশ কয়েক জন অভিযোগ করেছেন। তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে সাধারণ মানুষের থেকে তোলা তুলবে, এটা মানা যায় না। পুলিশ আইন মোতাবেক উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’ সপ্তগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তপন দাশগুপ্তও বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। পুলিশকে বলেছি তদন্ত করতে। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে। এখানে রাজনীতির কোনও ব্যাপার নেই।’’

ত্রিবেণীর বাগাটি রেলগেট এলাকার বাসিন্দা সুমিতা দাস শনিবার মগরা থানায় সোনা এবং অম্বা ও অম্লানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে মহিলা জানান, উলুবেড়িয়ায় জমি কিনিয়ে দেওয়ার নাম করে সোনার নির্দেশে অম্বা এবং অম্লান ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাঁর কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু জমি কিনিয়ে দেননি। টাকাও ফেরত দেননি। উপরন্তু সোনা তাঁকে গালিগালাজ করেছেন।

মহিলার খেদ, তাঁর স্বামীর সারা জীবনের সঞ্চয় মিথ্যা কথা বলে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পথে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়েই তিনি প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সোনার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ তিনি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্বামী বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী ছিলেন। তিন বছর আগে অবসর নেন। তাঁর সঞ্চিত টাকাই ওদের দেওয়া হয়। ওরা বলেছিল, তিন মাসের মধ্যে জমি রেজিস্ট্রি করে দেবে। করেনি। একাধিকবার এ কথা অরিজিতাকে জানানো হয়েছে।’’

গত বছরের ৭ নভেম্বর দলবিরোধী কাজের জন্য সোনাকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই অবশ্য তৃণমূল শিবিরে তাঁকে স্বমহিমায় দেখা যাচ্ছিল। ভোটের আগে ডানলপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা আয়োজনের দায়িত্বে পুরোভাগে ছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE