E-Paper

ইতিহাসের সন্ধানে প্রদর্শশালা বিধানচন্দ্র কলেজে

তিন বছর আগে বলাগড় কলেজে প্রদর্শশালা তৈরি হয় জাতীয় সেবা প্রকল্পের উদ্যোগে। চন্দননগর সরকারি কলেজেও সেজে উঠেছে প্রদর্শশালা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০৬
প্রদর্শশালার অন্দরে।

প্রদর্শশালার অন্দরে। নিজস্ব চিত্র ।

অপ্রশস্ত একটি ঘর। তার মধ্যেই মিলবে এ তল্লাটের ইতিহাসের প্রশস্ত পথের সুলুকসন্ধান। প্রদর্শশালা তৈরি হল হুগলির রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজে। মঙ্গলবার এই কক্ষের দ্বারোদঘাটন করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা কলেজের সভাপতি, চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়। পুরনো ছবি সংবলিত আঞ্চলিক ইতিহাস, মানুষের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, বইপত্র থেকে কলেজের ফেলে আসা সময়ের নানা জিনিস সংগ্রহের তালিকায় রয়েছে।

বিধায়কের কথায়, ‘‘শিক্ষার্থী, গবেষক এবং আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চাকারীরাও এই প্রদর্শশালা থেকে উপকৃত হবেন।’’

তিন বছর আগে বলাগড় কলেজে প্রদর্শশালা তৈরি হয় জাতীয় সেবা প্রকল্পের উদ্যোগে। চন্দননগর সরকারি কলেজেও সেজে উঠেছে প্রদর্শশালা। তুলনায় ছোট হলেও রিষড়ার কলেজটির এই উদ্যোগ ইতিহাস অনুসন্ধিৎসুদের খুশি করবে।

বিধান কলেজ স্থাপিত হয় ১৯৫৭ সালে। কলেজের পাশেই বইছে গঙ্গা। নানা ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস এই ছোট শহরে। বিভিন্ন কল-কারখানা মজবুত করেছিল অর্থনৈতিক বুনিয়াদ। বাণিজ্যের জন্য এখানে এসেছিলেন ইউরোপীয় বণিকেরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কারখানা উঠে গিয়েছে। আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বদলেছে। জনপদ ছেয়েছে কংক্রিটের জঙ্গলে।

কলেজের অধ্যক্ষ রমেশ করের ইচ্ছে ছিল, শহরের অতীতকে এক ছাদের তলায় ধরে রাখা এবং সেই প্রবাহমানতায় বর্তমানকে ছোঁয়া। সেই কাজে উঠেপড়ে লাগেন ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান শমীন্দ্রমোহন বিশ্বাস। কার্যত তাঁর হাতেই গড়ে উঠেছে এই প্রদর্শশালা। অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রীরা সাহায্য করেছেন।

মনসামঙ্গল কাব্যে রিষড়ার উল্লেখ রয়েছে। সেই উদ্ধৃতি রাখা হয়েছে প্রদর্শশালায়। থাকছে হাতে লেখা বাইবেলের নিদর্শন থেকে ভূর্জ্যপত্র, পুরনো টেলিভিশন, রেডিয়ো, টেলিফোন, ক্ষুদ্রতম ক্যামেরা, সুদৃশ্য ঝাড়বাতি। পুরনো আমলের মুদ্রার সম্ভারও। তাতে রয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মুদ্রাও। কলেজেরপুরনো পত্রিকা থেকে হ্যাজাকও আছে। টাইপ শেখার কোর্স ছিল এখানে।তার টাইপ-রাইটার যন্ত্রও ঠাঁইপেয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন বিধানচন্দ্র রায় স্বয়ং। আছে সেইছবিও। আছে পুরসভা পরিচালিত অবৈতনিক বিদ্যালয়, পঞ্চানন মন্দির, গৌড়ীয় মঠ, অনাথ আশ্রম, বড় মসজিদ-সহ এ শহরের নানা প্রতিষ্ঠানের পুরনো সময়ের ছবি। রিষড়ায় রয়েছে জুটমিল। তার স্মারক হিসাবে চটের জিনিস রাখা হয়েছে। রয়েছে টেরাকোটা শিল্পের নমুনা, বাঁকুড়ার ঘোড়া, বাঁশের বাঁশি, হাতপাখা ইত্যাদি।

অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আরও একটি ঘর প্রদর্শশালার কক্ষ হিসাবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হবে।’’ শমীন্দ্রমোহনের কথায়, ‘‘ইতিহাসের নানা উপাদান ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। সেই আকর সংগ্রহ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।এই প্রদর্শশালাকে আরও সমৃদ্ধ করতে সে কাজ আমাদের চলবে। ছাত্রছাত্রীরাও উৎসাহ পাবে। প্রদর্শশালায় এসে ইতিহাসের সঙ্গে বর্তমানকে মেলানো যাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rishra

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy