Advertisement
২০ মে ২০২৪
COVID-19

Bengal Polls 2021: কোভিড শয্যা বাড়ছে হুগলিতে

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতাও বাড়তে শুরু করেছে।

চৈত্র মাসের শেষ রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন সেলের বাজারে উপচে পড়া ভিড়। করোনা বিধি লাটে, অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক।

চৈত্র মাসের শেষ রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন সেলের বাজারে উপচে পড়া ভিড়। করোনা বিধি লাটে, অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:২৫
Share: Save:

আশঙ্কা যে এতটা দ্রুত হারে সত্যি হবে, অনেকেই ভাবেননি। হুগলিতে ভোটগ্রহণ শেষ। কিন্তু নির্বাচন-পর্বে ক্রমেই বেড়েছে করোনার বিপদ। গত বছরের শেষ দিক থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমতে থাকায় অনেকাংশেই চিন্তামুক্ত হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই চিন্তা দ্বিগুন হয়ে ফিরতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমনই, নতুন করে করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো তৈরির কাজে হাত দিতে হয়েছে।

তিন সপ্তাহ আগেও হুগলিতে অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন একশো জনের কম। সেই সংখ্যা এখন প্রায় হাজার। দিন কুড়ির মধ্যে এখানে সংক্রমণ কী হারে বেড়েছে, পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। শ্রীরামপুর, রিষড়া, চন্দননগর-সহ বিভিন্ন শহরে এবং গ্রামাঞ্চলেও প্রতি দিনই করোনা রোগীর খোঁজ মিলছে।

গত বছরে করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় শ্রীরামপুর শ্রমজীবী, ব্যান্ডেল ইএসআই, সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টার এবং ডানকুনি ও আরামবাগের দু’টি নার্সিংহোমে করোনার চিকিৎসা হত। করোনার প্রকোপ কমায় শ্রমজীবী, ট্রমা কেয়ার এবং নার্সিংহোমদু’টিতে করোনা চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ব্যান্ডেল ইএসআইতে ওই চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতাও বাড়তে শুরু করেছে। ব্যান্ডেল ইএসআইতে ১০০টি শয্যার মধ্যে ২৮টি আইসিইউ। আইসিইউ শয্যার অনেকটাই ভরে গিয়েছে।

পরিস্থিতি আঁচ করে ফের পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ৩০টি এইচডিইউ শয্যা চালু করা হবে। এইচডিইউ সাধারণ শয্যার তুলনায় কিছুটা বাড়তি পরিষেবার সুবিধাযুক্ত। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ৩০টি 'সারি' শয্যা চালু করা হবে। করোনার উপসর্গ রয়েছে অথচ পরীক্ষিত নয়, এমন রোগীদের এখানে ভর্তি করা হবে। দু’টি জায়গাতেই আগামী মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরিষেবা চালু হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ৮০ শয্যা চালু করার চেষ্টা করা হবে। তার মধ্যে ২০টি সিসিইউ, বাকি ৬০টি সাধারণ শয্যা থাকবে।

করোনার শুরুর দিকে সব রোগীকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হত। এখন অবশ্য অনেকেই বাড়িতে থাকছেন। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে শারীরিক জটিলতা এমন জায়গায় যাচ্ছে যে, সিসিইউ শয্যার প্রয়োজন হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, সংক্রমণ বাড়লে এই ধরনের রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। সে ক্ষেত্রে সিসিইউ শয্যার আকাল হতে পারে। যেমনটা হয়েছিল গত বছর করোনার বাড়বাড়ন্তের সময়। বহু ক্ষেত্রেই সিসিইউ শয্যা জোগাড় করতে নাকাল হয়েছিলেন রোগীর আত্মীয়েরা। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সার্বিক পরিস্থিতির কথা বুঝে এখনও মানুষের চোখ না খুললে মুশকিল। মাস্ক পরা-সহ যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি কঠোর ভাবে পালন করা দরকার।’’ মাস্ক পরা নিয়ে জন-সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চলছে জেলা প্রশাসনের তরফে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সংক্রমণ কমে যাওয়ায় করোনা পরীক্ষা একেবারেই কমে গিয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন দৈনিক ছ’শো জনের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। দৈনিক ১৮-২০ হাজার করোনা-টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের খবর, ঢালাও ভ্যাকসিন মিলছে না। সে ক্ষেত্রে দৈনিক টিকা দেওয়ার সংখ্যা অনেকটা বাড়ানো যেত।

করোনার ভ্রুকুটি নিয়ে চিকিৎসকদের একাংশ চিন্তিত হলেও রাস্তাঘাটের চেহারা দেখে তা মালুম হওয়ার উপায় নেই। নির্বাচন-পর্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হোমরা-চোমরা প্রার্থী থেকে প্রচারে যোগ দেওয়া কর্মী-সমর্থকদের মতোই বহু সাধারণ মানুষ দিব্যি মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছেন। শিকেয় দূরত্ববিধি। চৈত্র সেলের বাজারে উপছে পড়া ভিড়ও অসচেতন, অসতর্ক।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অসচেতনতায় পোয়াবারো করোনার। সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona COVID-19 coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE