Advertisement
E-Paper

১০ বছর পর গোঘাটে ফিরলেন অভয় ঘোষ

ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে এ দিন গোঘাটে মহামিছিল করে বাম-কংগ্রেস জোট। মূলত সেই মিছিলে শামিল হতেই বছর তেষট্টির অভয়বাবুর গোঘাটে আসা। তিনি আসতেই ফের লাল ঝান্ডায় ছেয়ে যায় গোঘাট-২ ব্লক।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০৪
সিপিএম নেতা অভয়বাবু। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

সিপিএম নেতা অভয়বাবু। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

বাম আমলে তিনি ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। তাঁর ডাকে ‘বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেত’, এ জনশ্রুতিও শোনা যায়। প্রায় ১০ বছর বাদে বৃহস্পতিবার গোঘাটে ফিরে সিপিএম নেতা অভয় ঘোষের ঘোষণা, ‘‘সামনে অনেক বড় লড়াই। সেই লড়াই লড়তে হবে।’’

ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে এ দিন গোঘাটে মহামিছিল করে বাম-কংগ্রেস জোট। মূলত সেই মিছিলে শামিল হতেই বছর তেষট্টির অভয়বাবুর গোঘাটে আসা। তিনি আসতেই ফের লাল ঝান্ডায় ছেয়ে যায় গোঘাট-২ ব্লক। ২০১১ সাল থেকে যে ছবি এ পর্যন্ত দেখা যায়নি। প্রায় তিন হাজার মানুষ মিছিলে হেঁটেছেন। ছিলেন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, ত্রিদিব ভট্টাচার্য, সুদর্শন রায়চৌধুরী, দলের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুবাই ঘোষ প্রমুখ।

অভয়বাবু বলেন, “১০ বছর ধরে অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। তৃণমূলের সন্ত্রাস, দুর্নীতি-সহ সার্বিক অপশাসনের বিরুদ্ধে মানুষ জোট বাঁধছেন। শুধু তৃণমূলকে হারানোই একমাত্র লক্ষ্য নয় আমাদের। গোটা দেশ যারা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে দিচ্ছে, সেই বিজেপিকেও এখান থেকে তাড়াতে হবে। গ্রামের ৭০ শতাংশ মানুষেরই বামেদের প্রতি আস্থা এখনও অটুট আছে। লাল পতাকাই একমাত্র ভরসার জায়গা। মানুষ তা বুঝেছেন।”

রাজ্যে পালাবদলের বছরেও (২০১১) গোঘাট আসনটি ধরে রেখেছিল বামেরা। বরাবর আসনটি বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য বরাদ্দ থাকলেও জয়ের নেপথ্যে হাত থাকত সিপিএমের। অভয়বাবুই ছিলেন গোঘাটে দলের শেষ কথা। ২০১১ সালের ১৩ জুন বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশিত হয়। পরের দিনই অভয়বাবুর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ২০১১-র ১৫ জুন সপরিবারে কর্ণপুরের বাড়ি ছাড়েন অভয়বাবু। ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারি উত্তরপাড়া থেকে পুরনো খুনের মামলা এবং আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে জামিন পেলেও গোঘাটের কর্ণপুরের বাড়িতে আর ফেরেননি অভয়বাবু।

এখন সেই বাড়ি ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিন্তু বাড়িতে কোনও ভাঙচুর বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। স্থানীয়দের কেউ বলছেন, ‘‘ওই সাহসটা করবে কে!’’ কারও মনে হয়েছে, ‘‘অভয় ঘোষ এলাকায় পা দিতেই তৃণমূল কাঁপছে। তৃণমূল জানে ওই নেতার ডাকে এখনও হাজার হাজার মানুষ জোটবদ্ধ হবেন। লন্ডভন্ড হয়ে যাবে তৃণমূল।”

এ দিন মহামিছিলে আসার পথে গোঘাটের দুই বামকর্মী আক্রান্ত হন। তারপরেও তাঁদের সঙ্গীরা মিছিলে শামিল হন। তাঁরা জানান, অভয়বাবু থাকবেন জেনেই আসা। আহতদের মধ্যে একজনকে নিয়ে কলকাতার হাসপাতালে যান অভয়বাবু।

অভয়বাবু ফিরে আসায় বাম কর্মী-সমর্থকেরা আশ্বস্ত হলেও তৃণমূল অন্য কথা বলছে। দলের গোঘাট-২ ব্লক সভাপতি তপন মণ্ডল বলেন, “অভয় ঘোষ এলাকায় ফেরা মানেই মানুষ আতঙ্কিত। আবার আগের মতো এলাকা সন্ত্রস্ত করবেন বলেভয় পাচ্ছেন।” আর বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলাসভাপতি বিমান ঘোষের বক্তব্য, “বিজেপিকে আটকানোর জন্য তৃণমূলই ওঁকে ডেকে এনেছে।”

CPM West Bengal Election 2021
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy