E-Paper

ভরা বর্ষায় ডেঙ্গি বাড়ছে শহরাঞ্চলে

পুরসভা সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত চলতি বছরে এই পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ জন। তার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ওই আবাসনের।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৮:২০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বছরের শুরু থেকে হুগলিতে ডেঙ্গির সংক্রমণ বেশি ছিল গ্রামাঞ্চলে। বর্ষার মরসুমের শেষ পর্বে ছবিটা বদলেছে। শ্রীরামপুর, চুঁচুড়ার মতো শহরে মশাবাহিত এই অসুখ বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গ্রামীণ হুগলিতে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। যদিও আগামী অন্তত দু’মাস সর্বত্রই ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজ জোরকদমে চলবে।

শ্রীরামপুরের মাহেশে অভিজাত একটি আবাসন কমপ্লেক্স পুরসভার চিন্তা বাড়িয়েছে। মশার হানাদারি রুখতে যথাযথ ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে বুধবার সেখানে পুলিশ নিয়ে যান পুরকর্তারা। পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা-সহ একাধিক পুর-পারিষদ, পুরসদস্যদের পাশাপাশি দলে ছিলেন রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থার (সুডা) একাধিক পতঙ্গবিদ, পুরসভার ডেঙ্গি অভিযানের কর্মীরাও।

পুরসভা সূত্রে খবর, বুধবার পর্যন্ত চলতি বছরে এই পুর এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ জন। তার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ওই আবাসনের। বাকিদের মধ্যে আট জনের ওই আবাসনের সঙ্গে সংযোগ ছিল। কেউ গিয়েছিলেন শ্রমিক হিসেবে, কেউ অন্য কাজে। প্রায় তিন একর এলাকা জুড়ে ওই আবাসনের বিস্তার। পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৪৯ জন। তার প্রায় সবই ওই আবাসনের। সংক্রমণের অধিকাংশই হয়েছে গত এক মাসে।

পুর-পারিষদ (পূর্ত) সন্তোষ সিংহের দাবি, সেখানে‌ জমা জল অপসারণে খামতি থাকছিল। বাড়ি বাড়ি পর্যবেক্ষণে বেরোনো পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের ফ্ল্যাটে ঢুকতে দিতে চান না অনেকেই। ফলে, জল জমে মশার লার্ভা জন্মেছে কি না, দেখা সম্ভব হয় না। সম্প্রতি বেশ কিছু আবাসিকের জ্বর হলে পুরসভার তরফে সেখানে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলা হয়। সাড়া মেলেনি। পরিস্থিতি জেনে সুডা-র নির্দেশক জলি চৌধুরী পুর-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পরেই এ দিনের যৌথ অভিযান।

মশা জন্মানোর জায়গা খুঁজে বের করার পাশাপাশি মশার বংশ বিস্তার রুখতে পরামর্শ দেন পতঙ্গবিদেরা। আবাসন কমিটির পদাধিকারী এবং আবাসিকদের সঙ্গে বৈঠকে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মশা জন্মানোর উৎস নির্মূল করতে পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে।’’ পুর-স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের ব্যবহার নিয়ে নালিশ জানান আবাসিকেরা। মশার লার্ভা মারতে তেল ছড়ানো হয় এবং সাফাইয়ের কাজ যথাযথ ভাবে করা হয় বলে আবাসন কর্তৃপক্ষের তরফে পুরকর্তাদের কাছে দাবি করা হয়।

পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো-সহ সব ব্যাপারেই পুরসভা আবাসন কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করবে। এর পরেও পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ফ্ল্যাটে ঢুকতে বাধা পেলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। দুর্ব্যবহারের নালিশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে এক পুরকর্তা জানান।

হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ দেবীপ্রসাদ রক্ষিত জানান, ডেঙ্গির ক্ষেত্রে বছরের ৩০ থেকে ৪২ সপ্তাহ, অর্থাৎ, অক্টোবর মাস পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এখন ৩৪তম সপ্তাহ চলছে। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছর গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি ছিল। এ বার গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।’’ তাঁর বক্তব্য, ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকায় নিকাশি এবং সাফাইয়ে প্রভাব পড়ছেই। তবে, গ্রামসম্পদ কর্মীদের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy