বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। ফাইল চিত্র।
হাওড়ায় এ বার মারাত্মক আকার নিতে শুরু করেছে ডেঙ্গি। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। সব থেকে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন হাওড়া পুরসভা এলাকায়। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে চার-পাঁচ জন রোগী হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এই রোগ অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কাল, সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি দল হাওড়ায় আসছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর হাওড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪৩। তার পরে গত তিন সপ্তাহে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯৭-এ। আক্রান্তদের মধ্যে শুধু হাওড়া পুর এলাকাতেই রয়েছেন ৪২৮ জন। যাঁদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯৪ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিহোমে আছেন ৩৩৪ জন।
হাওড়া শহরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের প্রধান দায়িত্ব হাওড়া পুরসভার। পুর স্বাস্থ্য দফতরের ভেক্টর কন্ট্রোল দল (ভিসিটি) পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নজরদারি চালিয়ে মশা বা মশার লার্ভা ধ্বংস করার ব্যবস্থা করে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, ডেঙ্গি খুব বাড়ছে। আমার ধারণা, আরও দু’সপ্তাহ এটা চলবে। এখনও অনেক জায়গায় জমা জল নামেনি। সেখানেই ডেঙ্গির মশা জন্মাচ্ছে। তাই সাফাই দফতরকে আরও সক্রিয় হতে হবে। জমা জল সরিয়ে ফেলতে হবে।’’
হাওড়ার লিলুয়ায় পেয়ারাবাগান ও ভোটবাগানে এখনও বৃষ্টির জল জমে রয়েছে। হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত এলাকায় অতি উচ্চক্ষমতার পাম্প বসিয়ে জল বার করার কাজ চলছে। পুরসভার তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের বলা হচ্ছে, ছাদে বা বাড়ির আশপাশে যাতে জল জমে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে একটি বেসরকারি সংস্থাকে কাজে লাগানো হয়েছে। ওই সংস্থা ডেঙ্গিপ্রবণ ১০টি এলাকায় কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া, পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ভেক্টর কন্ট্রোল দল বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে লার্ভা চিহ্নিত করে তা পুরসভার ‘র্যাপিড অ্যাকশন টিম’ (র্যাট)-কে জানাচ্ছে, যাতে তারা গিয়ে সেই লার্ভা ধ্বংস করে।
চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সাফাই দফতরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কোথাও জল জমে থাকলেই তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা দরকার। সেই কাজ নিয়মিত হচ্ছে কি না বা ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে লার্ভা ধ্বংস করার লার্ভিসাইড তেল ছড়ানো হচ্ছে কি না, তা জানতে আগামী সোমবার থেকে নজরদারি শুরু হবে। পুর স্বাস্থ্য দফতর অন্যান্য দফতরের সঙ্গে ঠিক মতো সমন্বয় রেখে কাজ করছে কি না, তা-ও দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy