Advertisement
E-Paper

প্রাপ্য টাকা আটকে পাঁচ মাস, হাওড়ায় ডেঙ্গি রোধ কর্মসূচি ঘিরে সিঁদুরে মেঘ

পতঙ্গবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে দু’বছর অন্তর সংক্রমণ বড় আকার নিতে পারে। এমনকি, তা ছড়াতে পারে নতুন এলাকাতেও।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৩
Share
Save

ডেঙ্গি প্রতিরোধে নিযুক্ত কর্মীদের জন্য বরাদ্দ অর্থ রাজ্য সরকার গত পাঁচ মাস ধরে বন্ধ করে রাখায় বিপাকে পড়েছে হাওড়া পুরসভা। বেতন না পেয়ে চরম সঙ্কটে পড়েছেন প্রায় আড়াই হাজার কর্মী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, চলতি বছরে খুঁড়িয়ে চলছে মশাবাহিত এই রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি। পুরকর্তাদের দাবি, কর্মীদের পাঁচ মাসের বকেয়া বেতনের মধ্যে পুরসভার কোষাগার থেকে দু’মাসের বেতন মেটানো সম্ভব হয়েছে। এখনও বাকি আছে তিন মাসের বেতন। সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে বকেয়া রয়েছে পাঁচ মাসের টাকা। তার জন্য বার বার আবেদন করা হলেও বরফ গলেনি। সব মিলিয়ে ঘোরালো হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো পরিস্থিতি। কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বাঁধছে পুরসভার অন্দরেই।

গত বছরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচিতে জোর দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রতিটি পুরসভাকে। সেই নির্দেশের পরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা সশরীরে পুরসভায় এসে কাজের অগ্রগতির উপরে নজর রাখতেন। কিন্তু অভিযোগ, চলতি বছরে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে যেমন কর্মীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি, তেমনই ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচির উপরেও যথাযথ নজরদারি হচ্ছে না। ফলে বর্ষার সময়ে, অর্থাৎ, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হাওড়ায় ডেঙ্গির সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর।

পতঙ্গবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে দু’বছর অন্তর সংক্রমণ বড় আকার নিতে পারে। এমনকি, তা ছড়াতে পারে নতুন এলাকাতেও। হাওড়া পুরসভার দেওয়া হিসাব বলছে, ২০২৩ সালে শহরে ডেঙ্গি তীব্র আকার নিয়েছিল। সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছিল ১২, ১৫, ১৬, ৩৯ এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। বেসরকারি মতে সংক্রমিত হয়েছিলেন প্রায় সাড়ে চার হাজার বাসিন্দা। মৃত্যু হয়েছিল তিন জনের।

২০২৪ সালে পুরসভা ডেঙ্গি প্রতিরোধে শুরু থেকেই কোমর বেঁধে নামায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমে এসে দাঁড়ায় ৪৬৪-তে। পতঙ্গবিদদের অভিমত, চলতি বছরে ফের হাওড়া জুড়ে দাপট দেখা যেতে পারে এই রোগের। তা প্রতিরোধে এখন থেকেই ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে নিয়মিত মশার লার্ভা ধ্বংস করা এবং লার্ভিসাইড তেল ছড়ানো জরুরি। অভিযোগ, গত ছ’মাসে বিভিন্ন এলাকায়
পুরকর্মীদের নিয়মিত দেখা যায়নি। বাড়ি বাড়ি ঘুরে কোথাও দীর্ঘদিন ধরে জল জমে আছে কিনা, তা-ও পরীক্ষা করা হয়নি।

যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের দাবি, তাঁরা কাজ বন্ধ করেননি। তবে, চলতি মাসের মধ্যে বকেয়া বেতন না মেটালে তাঁদের কাছে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা ছাড়া অন্য পথ থাকবে না। মধুমিতা দত্ত নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক চলছে বলে আমরা এখনও আন্দোলনে নামিনি। দিনের পর দিন অনিয়মিত বেতন পেয়েও কাজ করছি। এর মধ্যে পুরসভা বকেয়া তিন মাসের বেতন না দিলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরেই পুরসভা ঘেরাও করে সব কাজ বন্ধ করে দেব।’’

এ বিষয়ে পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ডেঙ্গি কর্মীদের পাঁচ মাসের বকেয়া টাকার জন্য আমরা রাজ্য সরকারের কাছে বার বার আবেদন করেছি। আশা করছি, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ধাপে ধাপে সব টাকা মিটিয়ে দেবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}