উপায়: নদী জরিপ চলছে। সোমবার যদুনাথ হাতি ঘাটে। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী নদীর পুনর্জীবনের জন্য বারবার সোচ্চার হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। প্রবাহ বজায় রাখতে এ বার ভূমি ও সেচ দফতর এবং সাঁকরাইল ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে নদীর জরিপ শুরু হল। সাঁকরাইলে সরস্বতী নদী যেখানে গঙ্গায় মিশেছে, সেই যদুনাথ হাতি ঘাট থেকে মাপজোক শুরু হল সোমবার। আগামী বুধবার পর্যন্ত কাজ চলবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
সেচ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নদীর এক কিলোমিটার গতিপথের জরিপ করা হয়েছে। নথির বর্ণনার সঙ্গে নদীর মাপের এখনও কোনও পার্থক্য মেলেনি।’’ সাঁকরাইলের বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার বলেন, ‘‘এই কাজের দু’টি ভাগ আছে। প্রথমটি মানুষকে সচেতন করা। সেই প্রচার ইতিমধ্যে এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া যে সব জায়গায় নদীখাত দখল হয়ে গিয়েছে, সেই দখলদারি সরানো হবে। আপাতত বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) জেলাশাসকের কাছে জমাদেওয়া হবে।’’
সাঁকরাইল ব্লকের এক ধার দিয়ে বয়ে চলেছে গঙ্গা। লোকালয়ের মধ্যে দিয়ে যে অংশটা প্রবাহিত, তার অনেকাংশই আবর্জনার স্তূপে ভরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বহু জায়গায় নদীর একাংশ দখল করে কংক্রিটের নির্মাণ তোলা হয়েছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। তার জেরে গতি রুদ্ধ হয়েছে সরস্বতীর। কয়েক বছর আগে নদী সংস্কার করা হলেও তার হাল ফেরেনি।
দূষণ থেকে সরস্বতী নদীকে বাঁচাতে গত বছরের অক্টোবরে সাঁকরাইল ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছিল জেলা প্রশাসন। তারপর ঠিক হয়েছিল, নদীতে কেউ নোংরা ফেললেই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জরিমানা করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি এলাকায় লাগানো হবে নজরদারি ক্যামেরা। নিয়োগ করা হবে স্বেচ্ছাসেবক।
এই উদ্যোগ নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। মধ্য ঝোড়হাটের এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘সব পরিকল্পনা বিফলে যাবে না তো! এত বড় এলাকায় পাঁচটা নজর-ক্যামেরা বসিয়ে কিছু হবে না। আমাদের এলাকাতেই নদীর একাংশ দখল করে কংক্রিটের নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে নদীতে ময়লা ফেলেন। সেগুলোর নজরদারি কে করবে?’’ প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজের কাছের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘নদী না বলে সরস্বতীকে এখন মরা খাল বললেই হয়। যতই ব্যবস্থা নেওয়া হোক, মানুষ সচেতন না হলে এর হাল ফিরবে না।’’
সাঁকরাইলের বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হবে। এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। যে এলাকা থেকে অভিযোগ আসবে, সেখানকার প্রধানদের সতর্ক করা হবে। আশা করি, সুফল মিলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy