ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে ৯টা। হাওড়া স্টেশন চত্বরের কলকাতা বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। অথচ, একটিও বাস নেই। গোটা এলাকা কার্যত যানবাহন-শূন্য। দেখলে মনে হতে পারে, কোনও ধর্মঘটের দিন। সেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিষড়ার বাসিন্দা শিল্পী সেন। কিন্তু কলকাতার বাসের দেখা পাননি। শিল্পী বলেন, ‘‘প্রতি বছর এই দিনে অফিস যেতে সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু ভেবেছিলাম, অন্তত সরকারি বাস সমাবেশে যাবে না।’’
এন্টালির বাসিন্দা অভিজিৎ বসু বলেন, ‘‘ট্রেনে আমার সংরক্ষিত আসনে মিছিলকারীদের বসতে দিতে হয়েছে। হাওড়ায় এসে ট্যাক্সি পাইনি। বাস ধরতে এসে দেখছি, বাসও নেই।’’
শাসকদল তৃণমূলের ২১ জুলাই সমাবেশের দিনে এই দুই যাত্রীর বক্তব্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে, সোমবার হাওড়া স্টেশনে আসার পরে যাত্রী-ভোগান্তি ঠিক কোন পর্যায়ে ছিল। সকাল হতেই হাওড়া চত্বর থেকে উধাও হয়ে যায় সমস্ত বাস। কলকাতা ও হাওড়ার বেসরকারি বাসের পাশাপাশি দেখা মেলেনি সরকারি বাসেরও। দেখা যায়নি ট্যাক্সিও। ফলে, এ দিন অধিকাংশ নিত্যযাত্রীকে নির্ভর করতে হয়েছে ফেরির উপরে। কিন্তু ব্যস্ত সময়ে অধিকাংশ লঞ্চ ছিল মিছিলকারীদের দখলে। ভিড়ে ঠাসা লঞ্চে উঠতে না পেরে হাওড়া ফেরিঘাটে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে বহু সাধারণ যাত্রীকে।
তবে হাওড়া স্টেশনে তৃণমূলের অভ্যর্থনা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন সমাবেশের মিছিলের পাশাপাশি ছিল তারকেশ্বরে পুজো দিয়ে ফিরে আসা পুণ্যার্থীদের ভিড়। তারই সঙ্গে ছিল হাওড়া থেকে কলকাতার ভূতনাথ মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার তাড়া। সব মিলিয়ে সকালে যানজট সামলানো ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা আমরা ভাল ভাবেই সামলাতে পেরেছি।’’
তবে নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, এ দিন যানবাহন বেশি চলেনি। তাই পুলিশ যানজট সামলানোর কৃতিত্বের দাবি করলেও গণপরিবহণ ব্যবহারকারী যাত্রীদের ভোগান্তি একটুও কমেনি বলেই অভিযোগ তাঁদের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)