Advertisement
০১ মে ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Collapse

কখন উদ্ধার হবে ছেলেরা, উৎকণ্ঠায় বাবা-মায়েরা

রবিবার থেকেই রান্না চাপাননি সৌভিকের মা লক্ষ্মী। মঙ্গলবার বেলা একটা নাগাদ দেখা গেল, ফোন নিয়ে প্রৌঢ় দম্পতি বাড়ির দাওয়ায় বসে।

উদ্বিগ্ন পাখিরা দম্পতি।

উদ্বিগ্ন পাখিরা দম্পতি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরশুড়া শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৪
Share: Save:

ফোন কাছছাড়া করছেন না প্রৌঢ় দম্পতি। বেজে উঠলে পড়শিরাও দৌড়ে আসছেন নতুন কোনও খবর এল কি না জানতে। এমনই উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা পুরশুড়ার হরিণাখালির বছর চব্বিশের সৌভিক পাখিরার পরিবারের। একই অবস্থা নিমডাঙির বছর উনিশের জয়দেব পরামানিকের পরিবারেরও।

রবিবার থেকেই রান্না চাপাননি সৌভিকের মা লক্ষ্মী। মঙ্গলবার বেলা একটা নাগাদ দেখা গেল, ফোন নিয়ে প্রৌঢ় দম্পতি বাড়ির দাওয়ায় বসে। পৃথক বাড়িতে থাকা লক্ষ্মীর ছোট জা মলিনা তাঁদের জন্য রবিবার থেকেই রান্না করে পাঠাচ্ছেন। লক্ষ্মী বলেন, “গতকাল বিকেলে ছেলের কোম্পানির পাল সাহেব নামে কারও পাঠানো ভয়েস রেকর্ডে ছেলের গলা শুনেছি। সে ভাল আছে বলছিল। কিন্তু ছেলের সঙ্গে নিজে কথা না বলা পর্যন্ত কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না।’’

ছেলের ঠিক কী কথা শুনেছেন?

লক্ষ্মী জানান, সম্ভবত পাইপের মধ্যে দিয়ে আমার ছেলের নাম ধরে এক জন জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘‘সৌভিক, সৌভিক, তুমি ঠিক আছ? ছেলে বলছিল, স্যার আমি ঠিক আছি, ঠিক আছি। আবার এ দিক থেকে বলা হচ্ছিল, পপকর্ন পাঠাচ্ছি, পাইপের সামনে দাঁড়াও। ছেলে বলছে, স্যার দাঁড়িয়েছি, পাঠান, পাঠান।’’

চিন্তায় জয়দেবের পরিজনেরাও।

চিন্তায় জয়দেবের পরিজনেরাও। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তরকাশী থেকে মঙ্গলবার সকাল থেকে তিন বার ফোন পেয়েছেন তাঁরা। একবার সকাল ৮টা নাগাদ ছেলের স্যার পাল সাহেব (সুব্রত পাল) জানান, সৌভিকদের সকালে খাবার পাঠানো হয়েছে। তাঁদের উদ্ধার কাজে মোটা পাইপ বসানো হচ্ছে। সকলে ভাল আছে। দ্বিতীয় ফোন আসে বেলা ১২টা নাগাদ। তৃতীয় ফোনটি এসেছে উত্তরাখণ্ডের থানা থেকে, বিকেল ৪টা নাগাদ। বলা হয়েছে, সকলে সুস্থ আছে। কখন উদ্ধার করা হবে জানতে চাইলে উত্তর আসে, রাতেই মধ্যেই।

উৎকণ্ঠায় রয়েছেন নিমডাঙির জয়দেব পরামানিকের বাবা তাপস এবং মা তপতী। তাঁরা দু’জনে কালীপুজো উপলক্ষে দুর্গাপুরে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখানেই রয়েছেন। তাঁর মেয়ে রিঙ্কুর স্বামীও উত্তরাখণ্ডের ওই সংস্থায় কর্মরত। তিনিও দফায় দফায় ফোন করে খবর পাঠাচ্ছেন। তপতী বলেন, “ছেলের ভয়েস রেকর্ড পাচ্ছি। জামাই নিজে উদ্ধার কাজে আছে। তবু উদ্বেগ কাটছে না।’’

রিঙ্কু বলেন, ‘‘স্বামীর থেকে জানতে পেরেছি, লোহার মোটা পাইপের মধ্যে দিয়ে সকলকে বের করার পরিকল্পনা আছে। সেটা লাগানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। তবে সকলে ভাল আছে, সুস্থ আছে। খাবার-দাবার দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE