Advertisement
E-Paper

ঘর ভাসছে কটালের জলে, ট্রেনেই আশ্রয়

বুধবারের ভরা কটাল ও ঝোড়ো হাওয়ার জেরে উলুবেড়িয়ার বিবিরচড়া এলাকায় বাঁধ উপচে হুগলি নদীর জল ঢুকে পড়ে শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে।

সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ০৫:১৫
ট্রেনের কামরায় জিনিসপত্র নিয়ে গৃহবধূ।

ট্রেনের কামরায় জিনিসপত্র নিয়ে গৃহবধূ। ছবি: সুব্রত জানা

ভরা কটালের জলে থইথই করছে ঘর। ভেসে যাচ্ছে জিনিসপত্র। প্রশাসন কোথায় ত্রাণশিবির করেছে, তা জানা নেই। অগত্যা প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল ফুলেশ্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা এক্সপ্রেস ট্রেনের কামরায়। রাতে সেই খবর পেয়ে দুর্গতদের আশ্রয় শিবিরে নিয়ে আসে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়া শহরের একটি ত্রাণশিবিরে বসে সেই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন বনি বোদক ও ফুলমণি বিবির মতো উলুবেড়িয়া পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

বুধবারের ভরা কটাল ও ঝোড়ো হাওয়ার জেরে উলুবেড়িয়ার বিবিরচড়া এলাকায় বাঁধ উপচে হুগলি নদীর জল ঢুকে পড়ে শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে। অল্প সময়ের মধ্যেই কার্যত পুরো ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল ঢুকে যায় সব বাড়িতেই। ভেঙে যায় বহু কাঁচা বাড়ি। দুর্যোগের সতর্কবার্তা ছিল। কিন্তু এমন জলোচ্ছ্বাস কল্পনাতেও ছিল না সেখানকার বাসিন্দাদের।

বনিদেবী পরিচারিকার কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘সকালে বাবুর বাড়িতে কাজে গিয়েছিলাম। দুপুরে এসে দেখি আমার ঘর পড়ে গিয়েছে। জিনিসপত্র ভাসছে। যতটুকু উদ্ধার করতে পেরেছি, ততটুকু নিয়েই বেরিয়ে পড়ি। কিন্তু
কোথায় যাব, বুঝতে পারছিলাম না। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ফুলেশ্বর স্টেশনে অনেকদিন ধরে এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। তাতেই
আশ্রয় নিয়েছিলাম।’’

ফুলমণিদেবীর চোখেমুখে এ দিনও আতঙ্কের ছাপ ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে নদীর বাঁধ উপচে জল ঢুকবে ভাবতে পারিনি। ঘর ডুবে গিয়েছে। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। ত্রাণশিবির কোথায় হয়েছে, তা জানতাম না। সকলে ট্রেনে আশ্রয় নিচ্ছে দেখে আমিও সেখানে চলে যাই।’’ অভিযোগ, সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রশাসন তাঁদের শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়নি।

দুর্যোগের আশঙ্কায় ওই এলাকায় চারটি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে বলে দাবি পুরসভা কর্তৃপক্ষের। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা বর্তমান ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর নবকুমার মাল বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের বাস। পুরো ওয়ার্ড-ই জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। চারটি ত্রাণশিবির হয়েছে। কিন্তু, এত মানুষকে রাখার মতো জায়গা নেই। এ ভাবে এলাকা প্লাবিত হবে তা ভাবা যায়নি। তাই মানুষ যেখানে পেরেছেন সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।’’

মহকুমাশাসক (উলুবেড়িয়া) অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘মহকুমার প্রায় দেড় লক্ষ মানুষকে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। ফুলেশ্বর এলাকাও প্লাবিত হয়েছিল। সেখানকার অনেক মানুষকেও ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। তবে কেন মানুষ ট্রেনের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ উলুবেড়িয়ার পুর-প্রশাসক অভয় দাস বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। অনেক মানুষকে সেখানে নিয়ে আশা হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই ট্রেনে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে উদ্ধার করে শিবিরে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।’’

Cyclone Yaas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy