হুগলির চন্দননগর এলাকায় বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা সহ রাজ্যের ছ’টি জেলায় পাইপ লাইন মারফত বাড়ি বাড়ি প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে গ্যাস অথরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (গেল)। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিসিএল) এবং রাজ্যের গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন যৌথ ভাবে ওই কাজ রূপায়ণের দায়িত্ব পেয়েছে। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায় ইতিমধ্যেই ওই কাজ শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এই ছয় জেলার ৪০টি পুরসভা এলাকায় ওই পাইপ লাইন বসবে।
নির্মাণকারী সংস্থার দাবি, এই গ্যাস পরিবেশবান্ধব। ফলে পরিবেশের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য। তা ছাড়া, বর্তমানে রান্নার গ্যাস যে দামে কিনতে হয়, তার তুলনায় এর দাম তুলনায় অনেকটাই কম। ফলে সাধারণ মানুষের সাশ্রয় হবে।
সূত্রের খবর, কয়েকটি পর্যায়ে ধাপে ধাপে এই গ্যাস সরবরাহের প্রক্রিয়ার পুরো কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে (ফেজ়-ওয়ান) হুগলির মগরার রাজারামবাটী এবং নদিয়ার গয়েশপুরে দু’টি গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। মগরার কেন্দ্রটি থেকে দিল্লি রোড হয়ে গ্যাস সরবরাহের পাইপ লাইন হাওড়ার উলুবেড়িয়া পুরসভা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। দিল্লি রোড লাগোয়া হুগলির যে সমস্ত পুরসভা আছে, ওই গ্যাস পাইপের মাধ্যমে সেখানে পাঠানো হবে। একই ভাবে গয়েশপুরের গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, বারাসত হয়ে কলকাতার নিউটাউন, বিধাননগর ছুঁয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর পর্যন্ত আপাতত ওই পাইপ লাইন বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাঁচ বছরে এক লক্ষ সংযোগের লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ চলছে। গ্যাসের মূল জোগান আসবে গেলের দুর্গাপুরের প্লান্ট থেকে।
জানা গিয়েছে, হুগলিতে বাঁশবেড়িয়া, চুঁচুড়া, চন্দননগর, বৈদ্যবাটী, শ্রীরামপুর পুরসভা এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। চন্দননগরে প্রায় ১২ কিমি, বাঁশবেড়িয়ায় ৯ কিমি, শ্রীরামপুরে ৯ কিমি অংশে পাইপ লাইন বসানো হয়ে গিয়েছে। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিধি অনুয়ায়ী আমরা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মোট ১১.৭২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্যাসের পাইপ লাইন বসানোর অনুমতি নির্মানকারী সংস্থাকে দিয়ে দিয়েছি। চন্দননগর স্টেশন রোড, খলিসানি-সহ বিভিন্ন এলাকায় পাইপ লাইন বসছে। ওই কাজে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির পরে তা মেরামতের খরচ নির্মাণকারী সংস্থা পুরসভাকে দেবে।’’
নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রের দাবি, গ্যাস সরবরাহের এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই পুনে, মুম্বই, গুজরাত, দিল্লি এবং নয়ডায় চালু আছে। বর্তমানে যে টাকায় মানুষ রান্নার গ্যাস কেনেন, তার তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম টাকায় এই প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যাবে। বিদ্যুতের মতোই প্রতি বাড়িতে গ্যাসের মিটার বসানো হবে। কতটা গ্যাস খরচ হচ্ছে, ‘স্ট্যান্ডার্ড কিউবিক মিটার প্রতি ঘণ্টা’, এই এককে পরিমাপ করা হবে।
নির্মাণকারী সংস্থার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমানে সিলিন্ডারের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা চালু আছে। পাশাপাশি, আগামী দিনে পরিবেশবান্ধব এই গ্যাস সরবরাহের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের পয়সা বাঁচবে। দেশের যে সব রাজ্যে চালু আছে, সেখানে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ব্যবস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy