‘বোস হাউস’ নিজস্ব চিত্র
শোনা যায়, এই বাড়িতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একাধিক বার এসেছিলেন। নেতাজির স্মৃতিধন্য হুগলির রিষড়ার এই ‘বোস হাউস’ রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দিলেন পিএমসি রবার কেমিক্যাল গ্রুপের কর্ণধার পরিতোষমোহন চক্রবর্তী। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক বাড়িটিতেই ওই অনুষ্ঠান হয়।
জানা গিয়েছে, গঙ্গাপাড়ে মনোরম পরিবেশে আড়াই বিঘের বেশি আয়তনের বাগানবাড়িটি ছিল নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসুর। বাড়িতে চারটি ঘর রয়েছে। গোটা চৌহদ্দি গাছগাছালিতে ঘেরা। তাতে প্রচুর পাখির বাস। বাড়ির ঠিকানা শরৎ বোস লেন।
পরবর্তী সময়ে ওই বাগানবাড়ি একটি কারখানার হাতে চলে যায়। তারা বাড়ি লাগোয়া গঙ্গার উপরে জেটি তৈরি করেছিল। কারখানার কাজের জন্য জাহাজে করে নুন আসত এখানে। ২০০৫ সালে বাড়িটি পিএমসি-র হাতে আসে। এত দিন তারা বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ করছিল।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের কয়েকজন সন্ন্যাসী। পরিতোষবাবু ছাড়াও তাঁর স্ত্রী শ্রীমতি চক্রবর্তী এসেছিলেন। সংস্থার পদস্থ কর্তা কুন্তল রেড্ডির পাশাপাশি প্রবীরকুমার রায়ও উপস্থিত ছিলেন। বাড়ির হাতবদলের আইনি প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন অয়ন পাকড়াশি। আরও অনেক বিশিষ্ট মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পরিতোষবাবু বলেন, ‘‘আমি এবং শ্রীমতি চাইছিলাম, নেতাজির স্মৃতিধন্য এই ঐতিহাসিক বাড়িটি এমন কোনও প্রতিষ্ঠানের হাতে অপর্ণ করতে, যাতে এই স্থানটির গরিমা অক্ষুণ্ণ থাকে এবং যথাযথ ভাবে রক্ষিত হয়। আমরা রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হলাম।’’
পিএমসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীর সেন বলেন, ‘‘বেলুড়ের রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ মঠ কর্তৃপক্ষ এই ঐতিহাসিক বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করে সেখানে নেতাজি এবং বিবেকানন্দের উপরে সংগ্রহশালা তৈরি করবে। ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।’’ এ দিন পরিতোষবাবুর পরিবারের ‘চক্রবর্তী ফাউডেশনের’ পক্ষ থেকে ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকার চেক রামকৃষ্ণ মিশনকে দেওয়া হয় সামাজিক কাজের জন্য।
টায়ারের রবার তৈরির ক্ষেত্রে যে রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়, রিষড়ায় পিএমসির কারখানায় তা তৈরি করা হয়। হায়দরাবাদেও তাদের কারখানা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান সারা পৃথিবী জুড়েই সম্মানের সঙ্গে ব্যবসা করেবলে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবীরবাবু জানান।
ওই সংস্থা নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত বাগানবাড়িটি বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দেওয়ায় রিষড়ার সাধারণ মানুষ এবং ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত লোকজন খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy