E-Paper

প্রোমোটার চক্রের ছক রুখে, নবরূপে ফিরল হাওড়ার ঐতিহাসিক ডাকঘর

হাওড়ার দাশনগরে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া, ভগ্নপ্রায় ওই ডাকঘরটিস্থানান্তরের জন্যও নিরন্তর চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ে ডাকঘরস্থানান্তরের সেই চেষ্টা শুধু যে রুখে দিয়েছেন তা-ই নয়, নিজেদের অর্থ ব্যয়ে নব কলেবরে গড়ে তুলেছেন সেটিকে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ০৯:৫৯
গোটা ডাকঘরটির প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা হয়েছিল।

গোটা ডাকঘরটির প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা হয়েছিল। —প্রতীকী চিত্র।

শতবর্ষে পা দেওয়া একটি ডাকঘর তুলে দিয়ে সেখানে বহুতল ও শপিং মল তৈরি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল প্রোমোটার চক্র। হাওড়ার দাশনগরে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া, ভগ্নপ্রায় ওই ডাকঘরটি স্থানান্তরের জন্যও নিরন্তর চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু এলাকার বাসিন্দারা কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ে ডাকঘরস্থানান্তরের সেই চেষ্টা শুধু যে রুখে দিয়েছেন তা-ই নয়, নিজেদের অর্থ ব্যয়ে নব কলেবরে গড়ে তুলেছেন সেটিকে।

গত বছরের ২৯ অগস্ট রহস্যজনক ভাবে আগুন লেগেক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঐতিহাসিক ওই ডাকঘরটি। সেই দিনটি স্মরণে রেখে,শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকারের ডাক ও তার বিভাগের হাওড়া শহরের প্রধান শাখা অফিসের কর্তারা ফেরউদ্বোধন করলেন নতুন করে সেজে ওঠা ডাকঘরটির।

কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক নীতি অনুযায়ী, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই একাধিক ডাকঘর স্থানান্তর করা হয়েছে বা তুলে দেওয়া হয়েছে। হাওড়ার দাশনগর স্টেশনের পাশে অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকা ডাকঘরটি ভাড়া বাড়িতেহওয়ায় দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সরকারি নিয়মানুযায়ী সেই ভবন সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি ডাক ও তার বিভাগ। তার ফলে গোটা ডাকঘরটির প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা হয়েছিল।

এরই মধ্যে এক দল প্রোমোটার ১২ কাঠা জমিতে থাকা ওই ডাকঘরটি ভেঙে বহুতল ও শপিং মল বানানোর পরিকল্পনা করে। এর মধ্যে গত বছর ২৯ অগস্ট ডাকঘরটিতে রহস্যজনক ভাবে আগুনলাগে। সেই দিনও এলাকাবাসীরাই আগুন নেভাতে সক্রিয় ভূমিকানিয়েছিলেন। এর পরে ডাকঘরটির শতাধিক গ্রাহক ও স্থানীয়েরা সেটিকে বাঁচাতে এককাট্টা হয়ে রুখেদাঁড়ান প্রোমোটার চক্রেরবিরুদ্ধে।

এলাকার বাসিন্দা বিভাস হাজরা এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘ওই সময়ে একাধিক বারপশ্চিমবঙ্গ সার্কলের পোস্টমাস্টার জেনারেলের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেই সময়েআমাদের জানানো হয়, ডাকঘরটি কাশীপুর এলাকায় উঠে যাওয়ার গেজেটনোটিফিকেশন হয়ে গিয়েছে। আর কোনও উপায় নেই। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। এর পরে হাওড়ার প্রধানডাকঘর শাখার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহাদেব মণ্ডলের সাহায্যেসেই সিদ্ধান্ত রুখে দিই। এর পরে আমরা নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে ডাকঘরটির পুনর্জন্মের ব্যবস্থা করি।’’

এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা কেষ্টপদ গুঁই, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘এই ডাকঘরে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গ্রাহক রয়েছেন। বহু প্রবীণ এখানে পেনশনের টাকা তুলতেআসেন। সেই ডাকঘর তো বন্ধ হতে দিতে পারি না। দুষ্টচক্রের প্রচেষ্টা সবাই মিলে রুখে দিতে পেরেছি, এটাইআমাদের গর্ব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Post Offce Postal Department

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy