E-Paper

হুগলিতে শেষ ‘নব জোয়ার’, দাগ রইল গোষ্ঠী-কোন্দলের

আরামবাগ মহকুমার চার বিধায়কই বিজেপির। বিরোধীদের এ তল্লাটে সভা ভরানো চ্যালেঞ্জ ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে।

পীযূষ নন্দী , প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৮:৪৬
আরামবাগের সভায় অভিষেক। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

আরামবাগের সভায় অভিষেক। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

আরামবাগে সভা, পোলবায় রোড শো ও বলাগড়ে ভোটগ্রহণ দিয়ে বুধবার হুগলিতে শেষ হল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নব জোয়ার’ যাত্রা। তবে তাঁর দিনভরের কর্মসূচিতে দাগ রয়ে গেল গোষ্ঠী-কোন্দলেরই।

আরামবাগ মহকুমার চার বিধায়কই বিজেপির। বিরোধীদের এ তল্লাটে সভা ভরানো চ্যালেঞ্জ ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু বুধবার আরামবাগের তেলুয়া-ভালিয়া মাঠের সভায় প্রত্যাশিত জমায়েত হয়নি বলে দাবি দলেরই একাংশের। তাঁরা জানাচ্ছেন, কুড়ি হাজারের বদলে লোক এসেছিল হাজার দশেক। পুলিশের হিসেবও বলছে, মেরেকেটে হাজার দশেকের জমায়েত ছিল।

কেন এমন হল?

জেলা নেতাদের একাংশ স্পষ্ট জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে পঞ্চায়েত প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে দলীয় স্তরে ভোটাভুটিতে একপক্ষ ভোট দিতে যেমন পারেননি, তেমনই ছাপ্পা ভোটও পড়েছে। তা নিয়ে অসন্তোষেই গোঘাট, খানাকুলের দু’টি ব্লক, পুরশুড়া এবং তারকেশ্বর থেকে অনেককে তাঁরা জড়ো করেননি। তারই ফল এটা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোষ্ঠী-কোন্দল মেটাতেই এখানে সভায় জোর দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু ভোটাভুটি ও সভার পর সেই কোন্দল আরও স্পষ্ট হয়েছে।

তবে সভার মূল আয়োজক আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারকশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় বিষয়টি মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, অন্তত ১৮ থেকে ২০ হাজার লোক হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘এত দুর্নীতি ঘাড়ে নিয়ে অভিষেক অযথা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মানুষ ওঁদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।’’ আর সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওদের প্রতি মানুষের এমনই অনীহা যে, বাইরে থেকে লোক এনেও মাঠ ভরাতে পারছে না তৃণমূল।’’

আরামবাগের সভায় টানা ৪০ মিনিটের বক্তব্যে মানুষকে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তাই বারবার দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যাঁকে শংসাপত্র দেবেন, তাঁকেই পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করবে তৃণমূল। যিনি মানুষকে পরিষেবা দেবেন না, তাঁকে সরে যেতে হবে।’’ বিরোধীদের বিঁধে তাঁর বক্তব্য, ‘‘হুগলির ১৮টি বিধানসভার মধ্যে আমরা আরামবাগের চারটি আসন হেরেছি। কিন্তু আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়কদের এলাকায় দেখা যায় না। এলাকার দাবি নিয়ে তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনে কিছু বলেনও না।’’

স্থানীয় সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ফেরিঘাটগুলি বেশি টাকা নিচ্ছে বলে শুনেছি। পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কৃষিপণ্য বিনা পয়সায় পারাপার হবে। অন্য পরিবহণের ক্ষেত্রে সরকারি নির্ধারিত টাকার বেশি নিলে তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সরকারি স্তরে আলুবীজ প্রক্রিয়াকরণের উদ্যোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতিও এ দিন দেন তিনি।

দিনের শেষে বলাগড় ব্লকের কামারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জেলার ১৮ টির মধ্যে ১০টি ব্লকের ১১৯ টি পঞ্চায়েতের ভোটগ্রহণ হয়। সেখানেও পান্ডুয়ার পাঁচগড়া-তোড়গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট গ্রহণে দলের এক সদস্য ভুয়ো ভোট দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তোলেন ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ। ‌রীতিমতো চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় পুলিশকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhishek Banerjee Arambagh TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy