Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩
lata mangeshkar

Lata Mangeshkar Death: লতার অজস্র গান তাঁর সংগ্রহে, বিহ্বল স্নেহাশিস

স্নেহাশিস জানান, লতা মঙ্গেশকর ৩৮টি ভাষায় গান করেছেন। ৩৫টি ভাষার প্রায় সমস্ত গান তাঁর সংগ্রহে রয়েছে। সংখ্যায় সাড়ে ছ’হাজারের কাছাকাছি।

লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে স্নেহাশিস।

লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে স্নেহাশিস। নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:০৬
Share: Save:

উৎকন্ঠা বদলে গেল শোকে।

Advertisement

সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর সারাজীবনে যত গান গেয়েছেন, তার সিংহভাগ সযত্নে রক্ষিত হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা স্নেহাশিস চট্টোপাধ্যায়ের আলমারিতে। রয়েছে নানা স্মৃতি। রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর কানে আসতেই বিহ্বল হয়ে পড়েছেন স্নেহাশিস।

স্নেহাশিস জানান, লতা মঙ্গেশকর ৩৮টি ভাষায় গান করেছেন। এর মধ্যে ৩৫টি ভাষার প্রায় সমস্ত গান তাঁর সংগ্রহে রয়েছে। সংখ্যায় সাড়ে ছ’হাজারের কাছাকাছি। বাংলা, হিন্দি, গুজরাতি, মরাঠির পাশাপাশি ইংরেজি, সিংহলি, মালয়েশিয়ান, আফ্রিকান ভাষাতেও গেয়েছেন শিল্পী। এই সব সৃষ্টি রেকর্ড, ক্যাসেট, সিডি, ডিভিডি, ভিসিডি প্রভৃতিতে নিজের ফ্ল্যাটে সংরক্ষণ করে রেখেছেন স্নেহাশিস। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘লতাজির গান নিয়ে ‘লতা গীতকোষ’ নামে বই লিখছি। ১৫টি খণ্ডের মধ্যে ১১টি প্রকাশিত হয়েছে। বাকিগুলো আর তাঁকে দেখাতে পারব না।’’

লতার গান সংগ্রহের ইচ্ছা হল কেন?

Advertisement

স্নেহাশিস জানান, মহম্মদ রফির মৃত্যুর পরে একটি পত্রিকায় বিভিন্ন লেখায় তাঁর গাওয়া গানের সংখ্যা এক এক রকম দেখেছিলেন তিনি। বিষয়টি তাঁকে অবাক করেছিল। এর পরেই লতাকে নিয়ে তাঁর কাজের শুরু। গত ৩২ বছর ধরে এই কাজ করেছেন। এ জন্য বহু সূত্র জোগাড় করতে, বহু লোকের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। বিভিন্ন লেখা, দুর্লভ ছবি জোগাড় করছেন। প্রকাশিত বই কখনও ডাকযোগে শিল্পীকে পাঠিয়েছেন। কখনও হাতে তুলে দিয়েছেন। মুম্বইতে সুরসাধিকার বাড়ি, ‘প্রভুকুঞ্জে’ও গিয়েছেন তিনি।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর লতার জন্মদিনে মরাঠি ভাষায় তাঁর গান নিয়ে লেখা বই তাঁকে পাঠান স্নেহাশিস। জানান, কিশোরী বয়সে লতার অভিনীত একটি সিনেমার স্থিরচিত্র এই বইয়ের প্রচ্ছদে ব্যবহার করেছেন। বইটির সব তথ্য জোগাড় করতে ২০ বছরের বেশি সময় লেগেছে তাঁর।

বিখ্যাত শিল্পীর সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ ১৯৯৩ সালে সল্টলেকে একটি অনুষ্ঠানে। প্রথম দেখাতেই ফোন নম্বর দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘কিসিকো নেহি দেনা। ইয়ে আপকে লিয়ে।’’ সঙ্গে অটোগ্রাফ। এর পর থেকে কিংবদন্তি শিল্পীর ফোন তাঁর অবারিত দ্বার হয়ে থেকেছে। তাঁর কথায়, ‘‘এক বার ওঁর জন্মদিনে ফোন করে বললাম, একটা গান উপহার দিতে চাই। রাজি হয়ে গেলেন। একটা দাদরা শুনিয়েছিলাম। শুনে বললেন, ‘আপ তো বহুত আচ্ছা গাতে’। ওঁর কথা কানে বাজছে।’’

স্নেহাশিসের গানের স্কুল ‘স্বরগঙ্গা’। শ্রীরামপুরে গঙ্গার সঙ্গে মিলিয়ে নামটি দিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর স্বয়ং। ফ্যাক্স পাঠিয়েছিলেন, ‘স্বরগঙ্গা কো মেরি শুভকামনায়ে’।

সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে নিয়মিত লতার স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখছিলেন স্নেহাশিস। তিনি জানান, তিন দিন আগেও লতার বোন মিনা ফোনে জানান, ‘দিদি ভাল আছেন’। তাঁর কথায়, ‘‘আমার মতো সাধারণ মানুষ ওঁকে যে ভাবে পেয়েছি, বলে বোঝানোর নয়। ওই উচ্চতার মানুষের কী অমায়িক ব্যবহার! দিদি সম্বোধন করতাম। বাবা-মায়ের পরেই আমার জীবনে ওঁর ঠাঁই। উনি আর নেই, ভাবতে পারছি না।’’

প্রিয় ‘লতাজি’ আর নেই। তবে, তাঁকে নিয়ে কাজ এখনও বাকি স্নেহাশিসের। সেই কাজেই মনোনিবেশ করবেন তিনি। কাজের মধ্য দিয়েই শ্রদ্ধা জানাবেন ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে দূরের তারার পানে চেয়ে...’-র গায়িকাকে। গঙ্গা জলে করবেন গঙ্গাপুজো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.