E-Paper

জগদ্ধাত্রী পুজোর শৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া কেন্দ্রীয় কমিটি

গত বার বোড়ো দিঘির ধার কী ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে সে ব্যাপারে শুভজিৎ সরাসরি কিছু বলতে চাননি। এমনকি, তিনি ওই পুজো কমিটির নামও বলতে চাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:২৪
জগদ্ধাত্রী নিরঞ্জন।

জগদ্ধাত্রী নিরঞ্জন। —ফাইল ছবি।

সামনে জগদ্ধাত্রী পুজো। চন্দননগর জুড়ে এখন সাজো সাজো রব। পুজোর দিনগুলিতে এবং দশমীর শোভাযাত্রার শৃঙ্খলা রক্ষায় এ বার আরও কঠোর হল এখানকার কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। বাজি পোড়ানো এবং ডিজে বক্স বাজানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ তো হলই, গত বার শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এ বার বোড়ো দিঘির ধার পুজো কমিটি রাতের শোভাযাত্রায় আলো ব্যবহার করতে পারবে না। তাদের শুধু প্রতিমার ট্রাক এবং বাজনা নিয়েই শামিল হতে হবে।

সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মোট ৪৮ দফা নির্দেশ জারি হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ। কমিটির পক্ষ থেকে পুজোর গাইড ম্যাপ প্রকাশ করা হয়। গত বার বোড়ো দিঘির ধার কী ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে সে ব্যাপারে শুভজিৎ সরাসরি কিছু বলতে চাননি। এমনকি, তিনি ওই পুজো কমিটির নামও বলতে চাননি। শুধু বলেন, ‘‘গত ৭০ বছর ধরে ৪টি করে লরি নিয়ে শোভাযাত্রায় শামিল হচ্ছিল ওই পুজো কমিটি। কিন্তু শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এ বার ওই কমিটিকে শুধুমাত্র প্রতিমা নিয়ে বের হতে হবে। "সব পুজো কমিটিকে নিয়ে বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোনও কমিটি নিয়ম ভাঙলে প্রশাসনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কমিটিও নিজেদের মতো ব্যবস্থা নেবে।’’

তবে, কমিটি থেকে যে কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে পুজো কমিটির নাম স্পষ্ট। এমনকি, ওই পুজো কমিটিও শৃঙ্খলাভঙ্গের কথা মেনে নিয়েছে। পুজো কমিটির সদস্য সম্রাট সেন বলেন, "গত বছর শোভাযাত্রায় আমাদের ট্রাকগুলি পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখেনি। ট্রাকে তোলার পরে প্রতিমার সজ্জাও নিয়ম মেনে রাখা হয়নি। কেন্দ্রীয় কমিটির জন্যই এখানে জগদ্ধাত্রী পুজো সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়। কমিটির সিদ্ধান্ত সকলের মানা উচিত। ভুল করেছি, শাস্তি পেয়েছি। আশা করছি, সামনের বার সঠিক ভাবে ফিরে আসব।’’

বোড়ো দিঘির ধারের জগদ্ধাত্রী পুজো এ বার ৭২ বছরে পড়ল। শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতি বছর শোভাযাত্রায় যোগ দেয় তারা। কিন্তু এই প্রথমবার শুধুমাত্র প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রায় থাকবে তারা।কেন্দ্রীয় কমিটির আওতায় এ বার মোট পুজোর সংখ্যা ১৭৭। এর মধ্যে চন্দননগর থানা এলাকায় ১৪৪ এবং ভদ্রেশ্বরে রয়েছে ৩৩টি পুজো। পুরসভার ভিত্তিতে চন্দননগরে ১৪২, ভদ্রেশ্বরে ২৪ এবং চাঁপদানিতে ১১টি। বিশেষ জয়ন্তী বর্ষ উদ্‌যাপন করবে ৮টি পুজো কমিটি।

দশমী আগামী সোমবার। কমিটি সূত্রের খবর, চন্দননগর থানা এলাকায় ৫৭ এবং ভদ্রেশ্বরের ১২টি মিলিয়ে মোট ৬৯টি পুজো কমিটি রাতের শোভাযাত্রায় যোগ দিচ্ছে। কমিটিপিছু সর্বোচ্চ ট্রাকের সংখ্যা ৪টি। ওই রাতে শহর পরিক্রমা করবে মোট ২৪৫টি ট্রাক।

শোভাযাত্রার নিয়মাবলি

১) শোভাযাত্রা শুরুর সময় সন্ধে ৬টা থেকে ৬টা ৫১ মিনিটের মধ্যে।

২) শুরুর সময় ব্যান্ড, ঢাক বা জেনারেটর সংক্রান্ত সমস্যার কথা শোনা হবে না।

৩) ট্রাকের সামনের কাচ এবং দু’পাশের জানলা আলো দিয়ে ঢাকা যাবে না।

৪) প্রতিমার চালচিত্র ট্রাকের তুলনায় অতিরিক্ত লম্বা হলে ভাঁজ (ফোল্ড) করতে হবে। চালচিত্রের উচ্চতা ২৮ ফুটের বেশি হলেও একই পদ্ধতি।

৫) ট্রাকে আলোকসজ্জার কাঠামোর উচ্চতা ২৮ ফুটের বেশি নয়।

৬) রাস্তায় ট্রাকে গোলযোগ দেখা দিলে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য মোটা দড়ি রাখতে হবে।

৭) দু'টি কমিটির ট্রাকে মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব ৩০ ফুট।

৮) প্রতিটি পুজো কমিটির দু'টি ট্রাকের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব ২০ ফুট।

৯) ট্রাকে বিচিত্রানুষ্ঠান নয়।

১০) ব্যান্ড দু’টির বেশি নয়। ব্যান্ডে ৫০ জন এবং ঢাকি থাকলে ১২ জনের বেশি নয়।

১১) যাত্রাপথে ডিজে ও যে কোনও বাজি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ছাড়াও রয়েছে আরও কিছু বিধিনিষেধ।

সূত্র: চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

jagaddhatripuja Jagaddhatri puja Chandannagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy