Advertisement
E-Paper

Ration: আঙুলের ছাপ মিলছে না যন্ত্রে, রেশন পেতে নাকাল

বিষয়টি মহকুমাশাসকের দফতরে জানিয়েছে চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এবং প্রবীণ নাগরিক অধিকার রক্ষা মঞ্চ।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:২৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

যন্ত্রে আঙুলের ছাপ মিলছে না। তাই রেশনের চাল-গম জুটছে না বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিক শিবসাধন মজুমদারের।

চন্দননগরের গোলাপবাগান হালদারপাড়ার বাসিন্দা শিবসাধনের মতোই হুগলিতে বয়স্কদের অনেকেই যান্ত্রিক ব্যবস্থার ‘প্রত্যাখ্যানে’ ফ্যাসাদে পড়েছেন। সরব হয়েছে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন।

শিবসাধনের পরিবারের চার জনের জন্য প্রতি মাসে রেশনে বিনামূল্যে ৮ কেজি চাল, ১২ কেজি গম বরাদ্দ। কয়েক মাস আগে তাঁরা সাইবার কাফেতে গিয়ে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর সংযোগ করান। তার পরে শিবসাধন রেশন দোকানে আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক যন্ত্রে দিয়ে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছিলেন। অভিযোগ, চলতি মাসে রেশন আনতে গেলে বলা হয়, ছাপ মিলছে না।

বোনের কার্ডে আধার নম্বর সংযোগ নেই। মহকুমাশাসকের দফতরে ফের বোনের রেশন কার্ডে আধার নম্বর সংযোগ করান শিবসাধন। তাঁর নিজের এবং স্ত্রীর ক্ষেত্রেও সরকারি দফতরে বলা হয়, ছাপ মিলছে না। শিবসাধনের ক্ষোভ, ‘‘ছাপ না মেলায় সরকারি কর্মী জানতে চান, আমার সুগার, প্রেশার আছে কি না। শেষে হাটতলায় একটি দফতরে যাই। সেখানে বলা হয়, আমাদের নথি ভুল ছিল। ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। অথচ, এর পরে গত রবিবার রেশন দোকানে গেলে একই কারণ দেখিয়ে ভাগিয়ে দেওয়া হয়।’’ তাঁর খেদ, ‘‘রেশনের প্রয়োজন আমাদের মতো পরিবারে অনেক। তা পেতে এতটা নাজেহাল হতে হবে!’’

চন্দননগরের বড়বাজারে পরের বাড়িতে থাকেন গৃহ-সহায়িকা, ষাটোর্ধ্ব সবিতা মাহাতো। তাঁর কথায়, ‘‘রেশন দোকানে বলছে, আঙুলের ছাপ মিলছে না। না মিললে রেশন পাব না।’’

বিষয়টি মহকুমাশাসকের দফতরে জানিয়েছে চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এবং প্রবীণ নাগরিক অধিকার রক্ষা মঞ্চ। সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আঙুলের ছাপ না মেলায় প্রবীণ নাগরিক, গৃহ-সহায়িকা, বিভিন্ন ধরনের কায়িক পরিশ্রমে যুক্তদের অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। আধার, রেশন দু’টি কার্ডই থাকলেও প্রযুক্তির খামতিতে রেশন পাচ্ছেন না। খাদ্যের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। লঙ্ঘিত হচ্ছে বেঁচে থাকার অধিকার।’’

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে বিশ্বজিৎবাবুদের দাবি, রেশন কার্ড থাকলে কোনও অজুহাতেই গ্রাহককে ফেরানো চলবে না। রেশন কার্ড না থাকলে, দ্রুত দিতে হবে।

সমস্যা মানছেন হুগলি খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিকরা। দফতরের উপ-অধিকর্তা শাশ্বতী ঘোষ বলেন, ‘‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে মূলত চামড়া কুঁচকে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তবে, প্রকৃত গ্রাহককে বঞ্চিত করার অভিপ্রায় কারও নেই। এমন নির্দেশও নেই। আঙুলের ছাপ না মিললেও গ্রাহককে ফেরাতে বারণ করা হচ্ছে দোকানদারদের। সে ক্ষেত্রে আধার নম্বর দাখিল করা নথির সঙ্গে মিলিয়ে রেশন দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এই মাস বা পরের মাসেও হয়তো সবাই রেশন পাবেন, কিন্তু দ্রুত যেন আধার কেন্দ্র থেকে আপডেট করিয়ে নেন।’’

ওই দফতর সূত্রের দাবি, এমনিতে সাধারণ ভাবে আঙুলের ছাপ না মিললে রেশন দেওয়ার কথা নয়। কেন্দ্রীয় কার্ডের ক্ষেত্রে এ ভাবে বণ্টন মানা হচ্ছে না। দোকানদারের ‘কোটা’ কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উপ-অধিকর্তা জানান, উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়া পর্যন্ত ১০টি শহরে ২৬ শতাংশের সংযুক্তিকরণ বাকি। অনেকের ক্ষেত্রে সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া সফল হয়নি। দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা চলছে।

ration Biometric
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy