কোথাও গোড়ালি-ডোবা, কোথাও তারও বেশি। বৃষ্টি হোক বা না হোক— এ ভাবেই জল জমে থাকে হুগলির চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের লেনিনপল্লি ও সুভাষনগরের একটি বড় অংশে। সেই জল ভেঙেই যাতায়াত করতে হয় এলাকাবাসীকে।
বেহাল নিকাশির ফলেই এই পরিস্থিতি, অভিযোগ মানুষের। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও বিষয়টি মানছেন। তবে তাঁরা এর মধ্যে রাজনীতি খুঁজে পাচ্ছেন। উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কেন্দ্র একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে৷ যার জেরে এলাকায় সাফাই এবং নিকাশির কাজ তলানিতে ঠেকেছে। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের হাল খারাপ। মূলত একশো দিনের কাজের টাকাতেই সাফাই অভিযান চলত। বর্তমানে মাস তিনেক অন্তর সাফাই হয়। তবে তা যথেষ্ট নয়।’’
বিজেপি নেতৃত্বের পাল্টা বক্তব্য, কেন্দ্র টাকা বন্ধ করে থাকলে তৃণমূলের দুর্নীতির জন্যই করেছে। তা ছাড়া, সাফাই বা নিকাশির মতো প্রাথমিক পরিষেবার ক্ষেত্রেও যে কেন্দ্রের টাকা ছাড়া বাংলার পঞ্চায়েত এতটুকু চলতে পারে না, তার প্রমাণ পদে পদে মিলছে। তবে এই পরিস্থিতির জন্য পঞ্চায়েত দায় এড়াতে পারে না।
লেনিনপল্লিতে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। প্রতি দিন কমবেশি জনা পঁচিশ খুদে সেখানে আসে। জল-কাদা ডিঙিয়েই চলে যাতায়াত। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশুদের পায়ে চর্মরোগ হচ্ছে। বড়দের অবস্থাও তথৈবচ। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম দাস বলেন, ‘‘এখন ডেঙ্গির মরসুম চলছে। নিকাশি সমস্যা না মিটলে ভয়ে তো থাকবই!’’ এক মহিলার ক্ষোভ, ‘‘ভোট এলেই নেতারা জল-সমস্যা মেটানোর কথা বলেন। ভোট মিটে গেলে ভুলে যান।’’ সুভাষনগরেও রয়েছে একটি অঙ্গনওয়াড়ি। সেখানে পড়ুয়াদের সংখ্যা খানিক বেশি। অভিযোগ, সেখানেও নর্দমার পচা জল ভেঙে যাতায়াত করতে হয়। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য, বিজেপির সুস্মিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘দুর্বিষহ অবস্থা। এর আগের তৃণমূল সদস্য ব্যবস্থা নিতে পারেননি। জলযন্ত্রণা দূর করতে
চেষ্টা চালাব।’’
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ওই দুই জায়গা ছিল ধানের খেত। সেখান থেকে শহরকেন্দ্রিক এই পঞ্চায়েত এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ছিল। প্রায সাড়ে তিন দশক আগে থেকে সেখানে
বসতি গড়ে উঠতে শুরু করে। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থা নষ্ট হতে শুরু করে। পরে ঢালাই রাস্তা এবং পাকা নর্দমা তৈরি হলেও জল জমার সমস্যা মেটেনি। তা ছাড়া, নিকাশি নালা নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় পরিস্থিতি এত খারাপ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)