Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Manoranjan Byapari

দলকে সময় বেঁধে দিয়ে পথে নামার হুঁশিয়ারি মনোরঞ্জনের

এক পঞ্চায়েত সদস্যার ঘরবাড়ি ভেঙেছে। বেধড়ক মারা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। পাঁচ বছরের বাচ্চাকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। উঠোনে ছুড়ে ফেলা হয়েছে।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী (বাঁ দিকে), রুনা খাতুন (ডান দিকে)

মনোরঞ্জন ব্যাপারী (বাঁ দিকে), রুনা খাতুন (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৪
Share: Save:

দলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে বাক্‌যুদ্ধ চলছে বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহল এবং জনমানসে চর্চা চললেও তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও পদক্ষেপ করেননি। এ ব্যাপারে দলকে কার্যত সময় বেঁধে দিয়ে পথে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন বিধায়ক। রবিবার ফেসবুক পোস্টে একইসঙ্গে দলের যুবনেত্রী রুনা খাতুন এবং তাঁর স্বামী অরিজিৎ দাসকে ফের বিঁধেছেন তিনি। পাল্টা মনোরঞ্জনের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রুনা।

ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী ১০ জানুয়ারি দলীয় বৈঠক রয়েছে। সেখানে সব সমাধান হবে।’’

এর আগে মনোরঞ্জন জানিয়েছিলেন, রবিবার রাত ৮টায় ফেসবুক লাইভ করে ‘জবাব’ দেবেন। তা অবশ্য তিনি করেননি। এ দিন ফেসবুকে একটি পোস্টে মনোরঞ্জন লেখেন, বলাগড়ে বিধায়ক কার্যালয়ে বসে বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর ফেসবুক লাইভ করার কথা ছিল। যাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার কথা ছিল, সেই ‘বালি মাফিয়া, মাটি মাফিয়া, জুয়ার বোর্ড চালানো, গাঁজা পাচারকারী, গরু ব্যাবসায়ী ও হরেক রকমের দুর্নীতিকারীদের সহায়কেরা’ তাঁকে হুমকি দিয়েছিল। তারা বিধায়ক-কার্যালয় ‘ভেঙেচুরে তছনছ’ করে দিয়েছে। এক পঞ্চায়েত সদস্যার ঘরবাড়ি ভেঙেছে। বেধড়ক মারা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। পাঁচ বছরের বাচ্চাকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। উঠোনে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। দোষীদের ‘শক্তিমান’ বলে উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য, বলাগড় জুড়ে তারা ‘ত্রাসের রাজত্ব’ কায়েম করে রেখেছে।

মনোরঞ্জন লিখেছেন, দলের দিকে তাকিয়ে আর এক-দু’দিন তিনি দেখবেন। ‘বিচার’ না পেলে দলমত নির্বিশেষে সব মানুষকে নিয়ে শুরু করবেন ‘বলাগড় বাঁচাও, দুষ্কৃতী হটাও’ আন্দোলন। ১৭টি পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে পদযাত্রা করবেন। থানা, বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ হবে। হবে প্রতীকী চাক্কা জ্যাম, গ্রেফতার বরণ। এটাই হবে তাঁর ‘এসপার ওসপার’ লড়াই। বিধায়ক আরও লেখেন, ‘ফুলন দেবীর স্বামী’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো গাড়ি নিয়ে খামারগাছি ঘাটে গরু নিয়ে যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে টাকা তোলে। তাঁর কাছে সেই ছবি রয়েছে। দল চাইলে পাঠিয়ে দিতে পারেন।

তৃণমূলের একাংশের ধারণা, বিধায়কের নিশানায় রুনা-অরিজিতই। এ ব্যাপারে রুনা বলেন, ‘‘বিধায়ক প্রমাণ দিন। যিনি মহিলা সম্পর্কে কুকথা বলেন, তাঁর কথা আর ধরছি না। মস্তিস্কবিকৃত মানুষের কথার জবাব দেওয়ার ইচ্ছা নেই।’’ প্রতিক্রিয়ার জন্য মনোরঞ্জনকে ফোন করে হলে তিনি বলেন, ‘‘১০ জানুয়ারি দলীয় মিটিং আছে।’’ বলেই ফোন কেটে দেন।

রবিবার জিরাটে দলীয় কর্মসূচিতে এসে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এলাকার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধায়ক নিজেই সুরক্ষিত নন, বলাগড়ের মানুষকে কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন! বিধায়ক রান্নাঘরের কথা বাইরে এনে দিচ্ছেন। সেই জন্যই বিধায়কের সঙ্গে এ সব চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Runa Khatun Balagarh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE