Advertisement
১৮ মে ২০২৪
potato farmers

Potato Farmers: ক্ষতিপূরণে অসামঞ্জস্য, বিক্ষোভ আলুচাষিদের

এ দিন সকালে ঘোলদিগরুই সমবায়ের অধীন ঘোলদিগরুই, নেওটা ও গোপীমোহনপুরের প্রায় হাজার খানেক চাষি জমায়েত করেন।

ঘোলদিগরুই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সামনে চাষিদের বিক্ষোভ।

ঘোলদিগরুই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সামনে চাষিদের বিক্ষোভ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২২ ০৭:১৮
Share: Save:

গত আর্থিক বছরে বিমা থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণ পাননি অনেকে, আবার অনেকের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণে অসঙ্গতি রয়েছে—এমনই নানা অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু করেছেন হুগলির আলুচাষিরা।

মঙ্গলবার সকালে পুরশুড়ার ঘোলদিগরুই এবং কুমারচক সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে বিক্ষোভ চলে। কুমারচকের বিক্ষোভ ছোট হলেও ঘোলদিগরুইতে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির গেটে তালা দিয়ে কর্মীদের আটক রেখে বিক্ষোভ হয়। পরে তালা খুলে এক ঘণ্টা অবস্থান বিক্ষোভ এবং আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেন চাষিরা।

ঘোলদিগরুই সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, সমবায়টি থেকে মোট ১ হাজার ৬০ জন আলুচাষি ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণের মোট পরিমাণ ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা। আধিকারিক শ্রীকান্ত বাগ বলেন, “যেহেতু বিমার টাকা কেটেছি আমরা, সমস্ত ক্ষোভ-বিক্ষোভ আমাদের উপরই পড়ছে। বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

এ দিন সকালে ঘোলদিগরুই সমবায়ের অধীন ঘোলদিগরুই, নেওটা ও গোপীমোহনপুরের প্রায় হাজার খানেক চাষি জমায়েত করেন। বলরাম সানা, স্বপনকুমার পাল, রঘুনাথ কেলে প্রমুখ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত (২০২১) মরসুমের আলু চাষের শুরুতেই অতিবৃষ্টিতে সদ্য বসানো আলু সব নষ্ট হয়। ফের চড়া দামে সার ও বীজ কিনে আলু ফলানো হলেও নাবি হওয়ায় ফলন মার খায়। পাশাপাশি কয়েকটি পঞ্চায়েত এলকার চাষিদের ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকে গেলেও এই সমবায়ের আওতায় চিলাডাঙ্গি এবং শ্যামপুর পঞ্চায়েতের চাষিরা ক্ষতিপূরণ পাননি। তাঁরা ঋণের ৮০ শতাংশ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছিলেন।

কেন ৮০ শতাংশ?

ঘোলদিগরুইয়ের চাষি মোহন ঘোড়ুই বলেন, “বিঘা পিছু আলু চাষের মোট খরচের জমি তৈরি, সার প্রয়োগ, বীজ কিনে শ্রমিক দিয়ে আলু বসানো পর্যন্তই ৮০ শতাংশ খরচ হয়। বাকি গাছ এবং আলু যথাযথ ফলাতে খালি ওষুধ এবং সেচের প্রয়োজন হয়।” প্রথম দফার খরচের ১০০ শতাংশই নষ্ট হয়েছে। পরবর্তী ফের আলু চাষ করেও চাষের খরচটা উঠেনি। এই অবস্থায় ৮০ শতাংশ ক্ষতিপূরণও চাষিদের পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে তাঁর দাবি।

ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢোকা পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও ক্ষতিপূরণের হেরফের নিয়ে ফুঁসছেন চাষিরা। যেমন পুরশুড়ারই ৪টি পঞ্চায়েত—পুরশুড়া ১ ও ২, কেলেপাড়া এবং ডিহিবাতপুর পঞ্চায়েতে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকলেও পুরশুড়া-১ পঞ্চায়েত এলাকার চাষিরা পেয়েছেন ৩৫.৫০ শতাংশ। আবার পাশেই পুরশুড়া ২-এর চাষিদের ক্ষতিপূরণ এসেছে ১.২০ শতাংশ। কেলেপাড়ার চাষিরা পেয়েছেন ৮ শতাংশ এবং ডিহিবাতপুরে ৬ শতাংশ।

গরমিলের কথা স্বীকার করে সমবায় দফতরের পুরশুড়া এবং খানাকুল ব্লকের যুগ্ম দায়িত্বে থাকা গৌতম সামন্ত বলেন, “গত ১১ মে চাষিদের ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে। তার পরের দিন থেকেই জেলার বিভিন্ন সমবায়গুলিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিষয়টি জেলার সংশ্লিষ্ট সমস্ত মহলে জানানো হয়েছে।”

জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সন্দীপ দে বলেন, “বিভিন্ন ব্লকে চাষিদের ক্ষোভ নিয়ে আমরা ওয়াকিবহাল। কিন্তু ক্ষতিপূরণ নিয়ে কৃষি দফতরের কোনও ভূমিকা নেই। তবে আমাদের জেলা স্তর থেকে সরকারিভাবে দায়িত্ব পাওয়া সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাকে ক্ষতিপূরণের বিষয়টা পুনর্মূল্যায়ন এবং পর্যালোচনার জন্য বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato farmers Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE