Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Mustard Oil

Mustard oil: তেলের দরে ছ্যাঁকা, তবু সর্ষে চাষে সাড়া কমছে

কৃষিকর্তাদের আক্ষেপ, চেষ্টা করেও সর্ষে চাষে কৃষকদের উৎসাহী করা যাচ্ছে না। চাষিদের দাবি, সর্ষেতে লাভ কম।

ভরা সর্ষে খেত। কিন্তু এমন খেতের সংখ্যা দিন দিন কমছে হুগলিতে। পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের উত্তর রাজ্যধরপুর এলাকায়।

ভরা সর্ষে খেত। কিন্তু এমন খেতের সংখ্যা দিন দিন কমছে হুগলিতে। পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের উত্তর রাজ্যধরপুর এলাকায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৩৪
Share: Save:

সর্ষের তেলের দাম আগুন। অথচ, চাষিদের সর্ষে চাষে উৎসাহ নেই!

হুগলির বিভিন্ন তেলকলে সর্ষে আসে ভিন্ রাজ্য থেকে। তৈলবীজ হিসেবে চাহিদা থাকলেও এই জেলায় গত কয়েক বছরে সর্ষে চাষের এলাকা কমেছে। কৃষিকর্তাদের আক্ষেপ, চেষ্টা করেও সর্ষে চাষে কৃষকদের উৎসাহী করা যাচ্ছে না। চাষিদের দাবি, সর্ষেতে লাভ কম। তাই, আলুই তাঁদের পছন্দ।

চাষিদের একাংশের হিসেব, আলুতে বিঘাপিছু সর্বনিম্ন লাভ ২৪ হাজার টাকা। একই পরিমাণ জমিতে সর্ষে চাষে সর্বাধিক লাভ হয় ১৪-১৫ হাজার টাকা। স্বাভাবিক কারণে অনেকে সর্ষে চাষ থেকে সরছেন। এই যুক্তিতে সর্ষে চাষ বন্ধ করেছেন গোঘাটের সামশের আলি, পুরশুড়ার বিশ্বনাথ হাটিরা।

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, পাঁচ বছর আগে জেলায় সর্ষে চাষের এলাকা ছিল ২৫ হাজার হেক্টর। এই মরসুমে তা অর্ধেকেরও কম। সেই জায়গা দখল করছে আলু। কৃষিকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মানুষ হাহাকার করছেন। এই পরিস্থিতিতে জেলায় সর্ষে চাষ বাড়লে এখানকার চাষিরা লাভবান হবেন। ভিন্‌ রাজ্যের উপরে নির্ভরতা কমবে। তেলের দামও আয়ত্তে থাকবে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন প্রকল্পে সর্ষে চাষে কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ দেওয়া হয়। আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।

কিন্তু এ সবেও চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে না। আরামবাগের রামনগর গ্রামের চাষি বিদ্যাপতি বাড়ুই জানান, সর্ষে অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লাগাতে পারলেই একমাত্র ভাল ফলনের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, বর্ষার হেরফেরে দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জমিতে এই সময়ে আমন ধান থাকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমন ধান তোলার পরে সর্ষে চাষ করলে দেরির কারণে জাব পোকায় আক্রান্ত হয়ে চাষ নষ্ট হয়। পর্যাপ্ত ফলন হয় না। তাই আলুই পছন্দ।’’ বাড়িতে তেলের জোগানের জন্য বিঘাখানেক জমিতে তিনি সর্ষে চাষ করতেন। এখন সেটুকুতেও আলু চাষ করছেন।

বহু চাষি শুধু নিজেদের প্রয়োজনেই জমির একাংশে সর্ষে চাষ করেন। তাঁদের কয়েক জন জানাচ্ছেন, চাহিদা থাকায় সর্ষের দাম কিছুটা ভাল হলেও পর্যাপ্ত নয়। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের উত্তর রাজ্যধরপুরের হেমন্ত গায়েন বলেন, ‘‘বাড়িতে তেলের জন্য এক বিঘা জমিতে সর্ষে চাষ করি। সর্ষের খোল সার হিসেবে লাগে। এখন সর্ষের বাজারমূল্য বেশি। আগামী মরসুমে বেশি জমিতে সর্ষে চাষের ইচ্ছে আছে।’’

সিঙ্গুর ব্লকের রাঘবপুর গ্রামের বিজন ঘোষও এক বিঘা জমিতে সর্ষে ফলান। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে সর্ষের যা দাম, ভাল ফলন হলে বিঘাপ্রতি ১০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। তবে, লাউ, কড়াইশুঁটি, ঢেঁড়শে বিঘাপ্রতি ৩০ হাজার টাকার বেশি লাভ।’’

জেলা কৃষি আধিকারিক জয়ন্ত পাড়ুই জানান, সর্ষেতে না হলেও তিল এবং বাদাম চাষের এলাকাকিছুটা বেড়েছে। ভোজ্য তেল হিসাবে এই দুই তেলকেও জনপ্রিয় করতে প্রচার চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mustard Oil
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE