Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Principal

স্কুলের মানোন্নয়ন, ‘শিক্ষারত্ন’ খানাকুলের প্রধান শিক্ষক

ইংরেজির শিক্ষক শেখ নাসারুল গাওসের আদি বাড়ি খানাকুলেরই পোল অঞ্চলের রায়বাড় গ্রামে। তবে বর্তমানে তিনি থাকেন আরামবাগ শহরে। তাঁর শিক্ষকতা শুরু ১৯৯২ সালে।

সম্মান: প্রধান শিক্ষক শেখ নাসারুল গাওস (ইনসেটে)। খানাকুলের কুমারহাট উচ্চ বিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

সম্মান: প্রধান শিক্ষক শেখ নাসারুল গাওস (ইনসেটে)। খানাকুলের কুমারহাট উচ্চ বিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৬
Share: Save:

টানা ২৪ বছর প্রধান শিক্ষক না থাকায় ধুঁকছিল উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলটি। ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি বন্যাপ্রবণ খানাকুলের কুমারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন শেখ নাসারুল গাওস। গত ১৭ বছর ধরে তিল তিল করে স্কুলকে সাজিয়ে তিনি এ বছরের ‘শিক্ষারত্ন’ নির্বাচিত হয়েছেন।

বুধবার রাজ্য স্কুল এবং জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর থেকে তাঁর নাম মনোনয়ন সংক্রান্ত চিঠি স্কুলে পাঠানো হয়। শিক্ষক দিবসে ওই সম্মান দেওয়া হবে জানিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক তপনকুমার বসু বলেন, “স্কুলের সার্বিক মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে একাধিক মানদণ্ডের বিচারে শেখ নাসারুল গাওসের নাম বিবেচিত হয়েছে। এই পুরস্কার অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।”

ইংরেজির শিক্ষক শেখ নাসারুল গাওসের আদি বাড়ি খানাকুলেরই পোল অঞ্চলের রায়বাড় গ্রামে। তবে বর্তমানে তিনি থাকেন আরামবাগ শহরে। তাঁর শিক্ষকতা শুরু ১৯৯২ সালে। ওই বছর খানাকুলের ধরমপুর হাই মাদ্রাসায় দু’মাস এবং পরের দশ মাস গোঘাটের বাজুয়া হাইস্কুলে ডেপুটেশনে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে খানাকুলের কৃষ্ণনগর জ্ঞানদা ইনস্টিটিউশনে স্থায়ী শিক্ষক পদে যোগ দেন। সেখান থেকে ২০০৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কুমারহাটে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন।

কী ভাবে তিনি মানোন্নয়ন করেছেন স্কুলের?

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে সেখানে ১৪ জন শিক্ষকের পদ ছিল। দফায় দফায় তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে স্কুলের শিক্ষক পদ বেড়ে হয় ৩০। স্কুলে কলা ও বিজ্ঞান বিভাগ, থানা এলাকার স্কুলগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ভোকেশনাল বা বৃত্তিমূলক শাখা চালু হয় তাঁর নেতৃত্বে। রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় পাঠকেন্দ্র চালু করেন তিনিই। অতীতে ৩৫০ পড়ুয়া বেড়ে হয়েছে ১৩৫০। স্কুলের নিয়মানুবর্তিতা, সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি, দুঃস্থ-মেধাবীদের সরকারি সহায়তা পেতে ব্যবস্থা করায় তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে বলে দাবি অভিভাবকদের।

প্রধান শিক্ষকের এই পুরস্কারে অবাক হননি এলাকার মানুষ এবং অভিভাবকরা। উল্টে তাঁদের অভিমান, পুরস্কার-প্রাপ্তিতে কিছুটা দেরি হয়ে গেল। স্থানীয় গ্রামবাসী তথা স্কুল পরিচালন কমিটির বর্তমান সভাপতি দেবাশিস সামুই বলেন, “ওই শিক্ষকের অনেক ভাল কাজের মধ্যে অন্যতম হল, স্থানীয় তফসিলি এবং সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলমুখী করা এবং তাদের ধরে রাখা। ২০১৪ সালে স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের উন্নীত হওয়ার কৃতিত্ব তাঁরই।’’

অবসর নেওয়ার পাঁচ মাস আগে এই স্বীকৃতি নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে নারাজ শেখ নাসারুল গাওস। স্মিত হেসে তিনি বলেন, ‘‘কোনও কিছুর প্রত্যাশায় কাজ করিনি। স্কুলের সার্বিক মানোন্নয়নে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে এই স্বীকৃতি আজীবনের সঞ্চয় হয়ে থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Principal Arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE