E-Paper

বিএলও-র সঙ্গে জনপ্রতিনিধি কেন, উঠছে প্রশ্ন

পঞ্চায়েতটি বিজেপি পরিচালিত। বিধায়ক ওই রাতেই সমাজমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ব্লক নির্বাচন দফতরে অভিযোগ জানান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ বলছে, এসআইআর সমীক্ষায় এনুমারেশন ফর্ম বিলির কাজে বিএলও-র (বুথ লেভেল অফিসার) সঙ্গে দলীয় ঝান্ডা ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক জন করে বিএলএ (বুথ লেভেল এজেন্ট) থাকতে পারবেন। কোনও জনপ্রতিনিধি থাকতে পারবেন না। কিন্তু দুই জেলার (হাওড়া-হুগলি) দুই প্রান্তে ওই কাজে তৃণমূলের দুই জনপ্রতিনিধির উপস্থিতির অভিযোগে সরব হল বিজেপি। ফলে, বিতর্ক দানা বেঁধেছে। দু’ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট তৃণমূল নেতারা।

মঙ্গলবার খানাকুল ২ ব্লকের মাড়োখানা পঞ্চায়েতের ২৯২ বুথে বিএলও-র সঙ্গে তৃণমূলের বিএলএ ছাড়াও দলীয় পতাকা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ওই দলের অনেকে ঢুকে যান বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। পঞ্চায়েতটি বিজেপি পরিচালিত। বিধায়ক ওই রাতেই সমাজমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ব্লক নির্বাচন দফতরে অভিযোগ জানান। বিধায়কের অভিযোগ, “এই সমীক্ষা পুরোপুরি সরকারি কাজ। সেখানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তথা সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতির নেতৃত্বে দলবল পতাকা নিয়ে কেন যাবে? ওঁরা বিএলও-র উপরে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন।” তিনি জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত সংখ্যালঘু প্রধান ওই বুথে তাঁদের দলের বিএলএ ছিলেন না। ফলে, প্রতিবাদের কেউ ছিলেন না। বুধবার বিএলএ-র নাম জমা পড়ে কমিশনে।

তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি শেখ আব্বাস আলি বলেন, “এসআইআর নিয়ে বিজেপি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সেই ভয়-ভীতি কাটাতে আমরা বুথে শিবির করছিলাম মঙ্গলবার। বাড়ি বাড়িও যাচ্ছিলাম। সে সময় বিএলও এনুমারেশন ফর্ম বিলি করতে যান। এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য হিসাবে বিএলএ আমার সঙ্গে কথা বলায় বিধায়ক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।”

মহম্মদ সরিফুল মোল্লা নামে সংশ্লিষ্ট বিএলও-র দাবি, “পরিচিত এবং পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি হিসাবে আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিছু বাড়ির হদিস পেতে ওঁর সহযোগিতা চেয়েছিলাম। ওই দলের কেউ আমার সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘোরেননি।” বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া জানান, দলীয় প্রতীক নিয়ে বিএলওদের সঙ্গে যাওয়া যাবে না বলে রাজনৈতিক দলগুলিকে বলে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, খতিয়ে দেখা হবে।

বুধবার জগৎবল্লভপুর বিধানসভার ডোমজুড়ের রুদ্রপুর পঞ্চায়েতের ১৮৪ নম্বর বুথেও ফর্ম বিলির সময়ে বিএলও অঙ্কিতা অধিকারীর সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘোরার অভিযোগ উঠল উপপ্রধান তৃণমূলের জানে আলম মল্লিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগটি তুলেছেন বিজেপির জগৎবল্লভপুর ৪ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি স্বপন বৈদ্য। জগৎবল্লভপুর বিধানসভার বিজেপি নেতা অনুপম ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা লিখিত অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখানে নিরপেক্ষ ভাবে কাজের দাবি জানাব নির্বাচন কমিশনের কাছে।’’

উপপ্রধানের দাবি, ‘‘ঠিকানা বুঝতে না পেরে বিএলও করেন। আমি গিয়ে ঠিকানা খুঁজে দিয়ে চলে আসি। ওঁর সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘুরিনি।’’ বিএলও-র দাবি, ‘‘আমার বাড়ি অন্যত্র হওয়ায় আমি ওই বুথের এলাকা চিনি না। এটা আমার কর্মক্ষেত্র। কাজের খাতিরে উপপ্রধানকে আগে থেকেই চিনতাম। তাই কয়েকটি ঠিকানা খুঁজে না পেয়ে ওঁকে ফোন করি। উনি এসে ওই বাড়িগুলি দেখিয়ে দিয়ে যান। সারাক্ষণ থাকেননি।’’ জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জগৎবল্লভপুর বিধানসভার তৃণমূল সভাপতি সুবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে উপপ্রধানের ওখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। ফোনেই ওঁর বুঝিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। খোঁজ নিচ্ছি। তেমন হলে উপপ্রধানকে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Khanakul domjur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy