E-Paper

নর্দমার জল দুয়ারে, ফ্লেক্স ঝুলল রাস্তায়

কয়েক দিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে শান্তিনগর স্ট্রিটে জল জমেছে। রবিবার প্রায় হাঁটুজল ছিল।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ০৯:২০
রাস্তায় টাঙানো ফ্লেক্স। উত্তরপাড়ার শান্তিনগরে। নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় টাঙানো ফ্লেক্স। উত্তরপাড়ার শান্তিনগরে। নিজস্ব চিত্র

বছরভর উত্তরপাড়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর স্ট্রিটের বাসিন্দাদের জলযন্ত্রণায় ভুগতে হয় বলে অভিযোগ। বর্ষার মরসুমে তো কথাই নেই! শেষ আষাঢ়ের ভরা বর্ষায় শহরের ওই রাস্তায় জল থৈথৈ। এ নিয়ে তিতিবিরক্ত বাসিন্দারা ফ্লেক্স ঝোলালেন। তাঁদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতির জন্য যাতায়াতে অসুবিধা শুধু নয়, আরও নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে। সাপ-পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। ক্ষতি হচ্ছে রুজিরুটিরও।

সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি স্থানীয় পুরসদস্য অমিতাভ মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুরসভা সাধ্যমতো চেষ্টা করছে বার বার। কিন্তু এলাকাটি নিচু। অন্য এলাকার জলও নর্দমা দিয়ে এসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।’’ সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, কোন পথে নিস্তার পাবেন ভুক্তভোগীরা? পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের বক্তব্য, ‘‘বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার ভিতরে নিকাশি নালা সংস্কারের ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে কথাবর্তা, পরিদর্শন হয়েছে। ওই নালা সংস্কার হলে শান্তিনগর-সহ আশপাশের এলাকায় নিকাশি সমস্যার অনেকটা সুরাহা হবে।’’

কয়েক দিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে শান্তিনগর স্ট্রিটে জল জমেছে। রবিবার প্রায় হাঁটুজল ছিল। ‘স্থানীয় অধিবাসীবৃন্দে’র নামে ওই ফ্লেক্স ঝুলতে দেখা গেল। তাতে লেখা— ‘দুয়ারে নর্দমার নোংরা জল’। সারা বছর রাস্তা খারাপ এবং জলমগ্ন থাকে, এই অভিযোগ তুলে গাড়ি ধীরে চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, এই পরিস্থিতির জেরে ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে।

এলাকার এক মহিলার কথায়, ‘‘যাচ্ছেতাই অবস্থা। ঘর থেকে বেরোনোই দায়। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। দীর্ঘদিন ধরেই এই ভোগান্তি। অল্প বৃষ্টিতেই বাড়িতে নর্দমার জল ঢুকে যাচ্ছে। সাপ-ব্যাঙ ঢুকে পড়ছে।’’ এক যুবকের ক্ষোভ, ‘‘এ ভাবে জল জমে থাকলে ব্যবসার বারোটা তো বাজবেই। জনস্বাস্থ্য বিঘ্নিত হচ্ছে, রুটিরুজিতে টান পড়ছে। অথচ, পুরসভা বা প্রশাসনের হেলদোল নেই।’’ স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় পুরসদস্য তথা পুরসভায় বার বার জানিয়েও কিছু হচ্ছে না।

ভুক্তভোগীদের দাবি, আগে পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। সাম্প্রতিক অতীতে নতুন করে নর্দমা তৈরি হওয়ার পরে বিপত্তি বেড়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলেও নর্দমার জমা রাস্তা থেকে নামতে চায় না। এই কারণে মাত্র মাস ছয়েক আগে তৈরি নতুন রাস্তায় পিচ উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে।

হিন্দমোটর কারখানা লাগোয়া এই জায়গায় সমস্ত পুকুর বুজে গিয়েছে বহু দিন আগে। ২০১৪ সাল থেকে ওই কারখানা বন্ধ। পলি পড়ে কারখানার ভিতরে দীর্ঘ গভীর নিকাশি নালা রুদ্ধ হয়ে ঘাস গজিয়ে গিয়েছে। তার জেরেই হিন্দমোটর স্টেশন লাগায়ো কয়েকটি ওয়ার্ডের সঙ্গেই শান্তিনগরেও জলযন্ত্রণা বহু গুণে বেড়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Water logged

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy