E-Paper

বাস্তুকারের আকাল, ভুগছে বহু পুরসভা

বেশিরভাগ পুরসভায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার প্রায় নেই। ফলে, পথবাতি বা বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অন্য সমস্যা সমাধানের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কোথাও শূন্য, কোথাও এক। হুগলির বিভিন্ন পুরসভায় সরকার অনুমোদিত বাস্তুকারের (ইঞ্জিনিয়ার) পদের সংখ্যা এমনই। এই পরিস্থিতিতে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন কাজে দরপত্র প্রক্রিয়ায় পদে পদে হোঁচট খাচ্ছেন পুর-কর্তৃপক্ষ।

বেশিরভাগ পুরসভায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার প্রায় নেই। ফলে, পথবাতি বা বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অন্য সমস্যা সমাধানের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন পুরসভার কর্তারা জানান, অন্যান্য পুরসভা বা সরকারি দফতরের বাস্তুকারদের দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা চলছে। তাঁদের বক্তব্য, ইঞ্জিনিয়ারের অভাবে অন্য সময়েও এই ভাবে কাজ চালাতে হয়। কিন্তু ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিতে কাজের বহর বেশি হওয়ায় বাস্তুকার জোগাড়ে সমস্যা বেশি হচ্ছে। হুগলিতে পুরসভা ১৩টি। এই কর্মসূচিতে বুথপিছু ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন পুরসভায় এখনও কিছু শিবিরহওয়া বাকি।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলার বেশিরভাগ পুরসভাতেই দীর্ঘদিন সরকার অনুমোদিত বাস্তুকার নেই, এটা ঘটনা। সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডিরেক্টরেট (এমইডি) এবং কেএমডিএ-র সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে দরপত্রের কাজ করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

সব থেকে করুণ অবস্থা কোন্নগরের। এখানে সরকার অনুমোদিত কোনও বাস্তুকারই নেই। এই পুরসভায় ওয়ার্ড ২০টি। ৭১টি বুথ। সূত্রের খবর, ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে অন্তত দেড় হাজার আবেদন জমা পড়েছে। ৩, ৪ এবং ১ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি বস্তি এবং চটকল লাইনে শৌচালয়, পথবাতির আবেদন জমা পড়েছে। সে সব আবেদনের যেগুলি অনুমোদন পাবে, দ্রুত তার দরপত্র করার কথা।

পুরপ্রধান স্বপন দাস জানান, চুক্তিভিত্তিক কয়েক জন বাস্তুকার দিয়ে কাজ চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘‘এক লক্ষ বা তার বেশি টাকার কাজের দরপত্রের অনুমোদন সরকারি বাস্তুকারেরাই দিতে পারেন। তাই প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সরকার অনুমোদিত বাস্তুকার দিয়ে ওই কাজ করানো মনস্থির করেছি।’’

কমবেশি একই পরিস্থিতি রিষড়া, শ্রীরামপুর, বাঁশবেড়িয়া, ডানকুনি, আরামবাগ ইত্যাদি পুরসভাতেও। রিষড়ার ২৩টি ওয়ার্ডে ১১১টি বুথ। সরকার অনুমোদিত বাস্তুকার সাকুল্যে এক জন। বাকি কাজ চুক্তিভিত্তিক বাস্তুকারদের দিয়ে সামলানো হয়। শ্রীরামপুর জল প্রকল্পের বাস্তুকারদের অনুরোধ করে দরপত্রের প্রক্রিয়ার কাজ করছেন রিষড়া পুর-কর্তৃপক্ষ। বাঁশবেড়িয়া শহরের ২২টি ওয়ার্ডের ৯২টি বুথে ৯১৩টি আবেদন জমা পড়েছে। এখানেও সরকার অনুমোদিত বাস্তুকার এক জন। ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নেই। কাজ কী করে করবেন, তা নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের ঘুম উড়েছে।

শ্রীরামপুরে ২৯টি ওয়ার্ডের ১৬০টি বুথে ১০৩৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এক জন মাত্র সরকারি বাস্তুকার রয়েছেন। পুরসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘দরপত্র অনুমোদনের জন্য মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডিরেক্টরেট (এমইডি) বা কেএমডিএ-র কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Hooghly

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy