পার্কে দেখা মিলছে এমনই বাহারি প্রজাপতির। নিজস্ব চিত্র।
ছ’ মাস আগেও যে এলাকা ছিল রুক্ষ-আবর্জনাময়, সেটাই এখন সবুজ। ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে প্রজাপতি। আরামবাগের বাতানল পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরের‘নীলাদিঘি’ নামে জলশায়কে ঘিরে গড়ে উঠেছে জীববৈচিত্র পার্ক। সেখানেই রঙবাহারি প্রজাপতির আকর্ষণে ভিড় জমছে ভালই।
ব্লক প্রশাসনের তদারকিতে প্রায় তিন বিঘা খাস জায়গায় এক বিঘা জুড়ে হয়েছে এই প্রজাপতি পার্ক। সেখানে এখনই ১৪টি প্রজাতির প্রায় হাজারের উপর প্রজাপতি আছে বলে হিসাব। বাকি জমির দেড় বিঘায় জাপানি ‘মিয়াওয়াকি’ পদ্ধতিতে জঙ্গল। এর বৈশিষ্ট্য, খুব কম সময়ে, কম জায়গার মধ্যে ঘন জঙ্গল তৈরি। অবশিষ্ট জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান। দিঘির গাঘেঁষে লাগানো হয়েছে প্রায় ৪০০ নারকেল গাছ।
একশো দিন কাজ প্রকল্পের আওতায় এই জীববৈচিত্র সংরক্ষণের কাজ হয়েছে জানিয়ে আরামবাগের বিডিও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পার্কে যাতে আরও উন্নত প্রজাতির প্রজাপতি পেতে পারি এবং সার্বিক ভাবে আরও জীববৈচিত্র আনা যায় সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছি আমরা।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রকল্পটির জন্য ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে ৪৩ লক্ষ ২ হাজার ৪০৯ টাকা।
বিডিও জানিয়েছেন, ৪০০ প্রজাতির প্রজাপতি যাতে পাওয়া যায় সেই অনুযায়ী গাছ, গুল্ম, উদ্ভিদ লাগানো হচ্ছে। লেবু, আকন্দ, রঙ্গন, আমলকি, কুল, আতা, তুলসি, কুলেখাড়া, ডুমুর, তিল ইত্যাদি গাছ-গাছালি লাগানো হয়েছে। আবার মধু সংগ্রহের জন্যেও মাধবীলতা, হাসনুহানা, অপরাজিতা, নয়নতারা, টগর, গাঁদা ইত্যাদি ফুলের চাষও হয়েছে। একটি জলাশয়ও করা হয়েছে, সেখানেও কিছু প্রজাতির প্রজাপতি খাদ্য সংগ্রহ করে।
স্থানীয়দের মধ্যে সাবির আলি, নবকুমার মালিকদের কথায়, ‘‘গত নভেম্বর মাসেও জায়গাটা প্রায় পতিত ছিল। প্রশাসন থেকে সেখানে পার্ক করার প্রস্তাব এলে আমরা এক কথায় রাজি হয়ে যাই। এই ক’মাসের মধ্যে জায়গার ভোল বদলে গিয়েছে। প্রজাপতির পাশাপাশি আনাগোনা বেড়েছে পাখিরও।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, উদ্ভিদ, প্রাণী ইত্যাদি জীবসম্ভার বাঁচিয়ে রাখতে হুগলি জেলার ১৮টি ব্লকেই ‘জীববৈচিত্র পার্ক’ তৈরি শুরু হয় ২০২০ সালের অগস্ট মাসে। সে সময় ব্লক প্রশাসনগুলিকে দ্রুত পার্কের জন্য জায়গা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজই বিভিন্ন ব্লকগুলিতে চলছে। ১০০ দিন কাজ প্রকল্পে ওই সব পার্ক রূপায়ণে জীব সংরক্ষণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শ্রমদিবস তৈরি হচ্ছে। সর্বোপরি ওই পার্ক ঘিরে পর্যটনকেন্দ্রের ফলে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলও পুষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy