Advertisement
E-Paper

Bridge: চার বার টেন্ডার শেষেও হল না কুলিয়া সেতুর কাজ

সেতুটি তৈরির জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ২৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথমবার টে‌ন্ডার করা হয়।

জয়পুরের কুলিয়া সেতু।

জয়পুরের কুলিয়া সেতু। ছবি: সুব্রত জানা

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২২ ০৬:১৬
Share
Save

চারবার টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকা সংস্থা মেলেনি। ফলে শুরু হয়নি কুলিয়া সেতুর কাজ। জয়পুরের কুলিয়াঘাটে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর পাকা সেতু তৈরির জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ বাসিন্দারা। সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ত দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা জানান, ঠিকা সংস্থা চেয়ে পঞ্চম বারের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। তাঁর দাবি, এ বারে আর সমস্যা হবে না। দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।

সেতুটি তৈরির জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ২৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথমবার টে‌ন্ডার করা হয়। তাতে তেমন কোনও সাড়া না মেলায় আরও তিন বার টেন্ডার করা হয়। কিন্তু এই তিন বারও সে ভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি। কেন এই পরিস্থিতি? এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের হাওড়া ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘একটা বড় কাজে ঠিকা সংস্থা নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেকগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হয়। যে কেউ টেন্ডারে যোগ দিলেই তাকে কাজ করতে দেওয়া হয় না। উপযুক্ত ঠিকা সংস্থার সন্ধানে বারবার টেন্ডার করতে হচ্ছে।’’

জেলার ‘দ্বীপাঞ্চল’ নামে পরিচিত আমতা-২ ব্লকের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা এই দু’টি পঞ্চায়েতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী দিয়ে ঘেরা এই এলাকার বাসিন্দাদের জেলার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনও সড়ক পথ নেই। ফলে তাঁদের নদী পার হয়ে জেলার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। কুলিয়াঘাটে পাকা সেতু হলে দ্বীপাঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হবে। এখানে পাকা সেতুর দাবিতে এ‌লাকার বাসিন্দারা অনেক বছর ধরেই আন্দোলন করেছেন। এখানে প্রথম পাকা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় ২০০৬ সালে। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত সেই সময়ে পাকা সেতুর উদ্বোধন করেন। সেতু তৈরির দায়িত্ব দওয়া হয় জেলা পরিষদকে। কিন্তু জেলা পরিষদের না ছিল টাকা। না ছিল পরিকাঠামো। ফলে তারা সেতু তৈরির কাজে এগোতে পারেনি।

২০১৮ সালে জেলার উন্নয়ন বৈঠকে যোগ দিতে এসে বিষয়টি জানতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তখন জেলা পরিষদের হাত থেকে সেতু তৈরির দায়িত্ব তুলে দেন পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাতে। পূর্ত দফতর সমীক্ষা, জমি অধিগ্রহণের মতো কাজ সেরে সেতু তৈরির জন্য ২৪ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়ে অর্থ দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। অর্থ দফতর টাকা বরাদ্দ করে। কিন্তু ঠিকা সংস্থা না মেলায় টাকা থেকেও কাজ হচ্ছে না।

সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ এলাকার বাসিন্দারা। হারুণ রশিদ নামে ঘোড়াবেড়িয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এই সেতুর জন্য আমরা কত আন্দোলন করেছি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে যখন উদ্যোগী হলেন, তখন আমরা আশা করেছিলাম এ বার কাজ হবে। কিন্তু কোথায় কী?’’ আমতার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র বলেন, ‘‘বারবার টেন্ডার হচ্ছে। অথচ ঠিকা সংস্থা মিলছে না। বিষয়টি অবাক করার মতো। কী কারণে ঠিকা সংস্থাগুলি আসছে না তা সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার। না হলে পরিকল্পনাটি খাতায় কলমেই থেকে যাবে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, সামনেই যেহেতু পঞ্চায়েত নির্বাচন তাই ততদিন সেতুর কাজ নাও শুরু হতে পারে। তিনি বল‌েন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে শাসকদল সেতুর কুমিরছানা দেখিয়ে ফের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করবে বলে আমার আশঙ্কা।’’ সেতু তৈরির কাজ অবিলম্বে শুরু না হলে গ্রামবাসীদের আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন অসিতবাবু।

আমতার তৃণমূল বিধায়ক সুকান্ত পাল অবশ্য অসিতবাবুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে রাজনীতি করি না। সেতু তৈরির কাজ দ্রুত শুরু হবে বলে পূর্ত দফতর আমাদের জানিয়েছে।’’

Bridge tender
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy